নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ১৬ বছর ধরে খুঁজতে থাকা জয়ের দেখা অবশেষে পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। তবে কিউইদের শেষ ওডিআইতে হারালেও সিরিজ হারতে হয়েছে টাইগারদের। ফলে সিরিজ শুরুর আগে কিউই দুর্গ জয়ের যে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন এই সিরিজের টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত তা অধরাই থেকে গেল। যদিও এই জয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে আত্মবিশ্বাস জোগাবে বলে বিশ্বাস টাইগার দলপতির।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ৯ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। টাইগার পেসারদের দাপটের ৯৮ রানে কিউইরা অলআউট হলে এনামুল হক বিজয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩৪.৫ ওভার হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। যেটি কিউই দুর্গে ১৯ বারের চেষ্টায় টাইগারদের প্রথম জয়। ঐতিহাসিক এ জয়ের পর অধিনায়ক শান্তর কণ্ঠে ভাসল টাইগার পেসারদের জন্য প্রশংসা।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণীতে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘ছেলেরা যেভাবে খেলেছে, সত্যিকার অর্থে আমি গর্বিত। বোলাররা অনেক কিছু শিখেছে। উইকেটের দিকে নজর না দিয়ে তারা ভালো জায়গায় বল করেছে। বোলাররা যেভাবে বল করেছে আমি খুশি।’
তবে আজকের মতো টাইগার পেসাররা যদি নিজেদের দাপটটা দ্বিতীয় ম্যাচেও দেখাতে পারত কিংবা দ্বিতীয় ম্যাচে ১৬৯ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলা সৌম্য যদি প্রথম ম্যাচেই জ্বলে উঠতেন, তাহলে হয়তো সিরিজটাও জেতা হতো বাংলাদেশের। তবে দুই বিভাগের সমন্বয় না ঘটায় প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খোয়ায় টাইগাররা। অথচ সিরিজ শুরুর আগে সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়েই লড়াইয়ে নেমেছিলেন শান্তরা। যদিও ২০০৭ সাল থেকে দেশটিতে ১৬ ওয়ানডে খেলে একটিতেও জয় পায়নি টাইগাররা।
শান্ত বলেন, ‘সিরিজ শুরুর আগে ভেবেছিলাম, আমরা সিরিজটা জিততে পারব। প্রথম দুই ম্যাচ জিততে পারিনি তবে আজ ভাগ্য সহায় ছিল।’
প্রথম দুই ম্যাচে সহজ জয় তুলে নিলেও শেষ ম্যাচ পাত্তা পায়নি নিউজিল্যান্ড। ২০৯ বল হাতে রেখেই তাদের দেয়া ৯৯ রান তাড়া করে ফেলে বাংলাদেশ। মাত্র ১৫.১ ওভারে জয় তুলে নেয়ার পথে আক্রমণাত্মক এক ইনিংস খেলেন শান্ত। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪২ বলে ৮ চারের মারে ৫১ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছেন তিনি। লক্ষ্যটা সহজ হলেও এমন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের কারণ কী?
ম্যাচশেষে জানতে চাওয়া প্রশ্নের জবাবে শান্ত বলেন, ‘আমি বোলারদের মেরে খেলার চেষ্টা করিনি। শুধু চেষ্টা করেছি নিজের খেলাটা খেলার এবং নিজের প্রক্রিয়ায় নজর রেখেছি।’
ওয়ানডে সিরিজ শেষ। একই মাঠে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ গড়াবে আগামী ২৭ ডিসেম্বর। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্টের পর ওয়ানডেতে জয় পাওয়া বাংলাদেশের সামনে এখন চ্যালেঞ্জ টি-টোয়েন্টির ডেডলক ভাঙা। শেষ ওয়ানডে জয় আত্মবিশ্বাস জোগাবে দলকে। তবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা ভিন্ন হওয়ায় পরিকল্পনাতেও আনতে হবে ভিন্নতা।
শান্ত বলেন, ‘এই ম্যাচ আমাদের অনেক বেশি আত্মবিশ্বাস জোগাবে কিন্তু টি-টোয়েন্টি ভিন্ন ফরম্যাট। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজাব আমরা।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে তিন দিনের ছুটি। ঐতিহাসিক জয়ের পর এ ছুটিতে টাইগারদের পরিকল্পনা কী? তারা কী ঘুরে দেখতে চান না প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে শোভিত নেপিয়ার শহরটা? সে পরিকল্পনা থাকলেও শান্তর মাথায় আপাতত ঘুরপাক খাচ্ছে টি-টোয়েন্টির লড়াই।
তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করেছি। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, কিছুদিনের মধ্যে আমাদেরকে টি-টোয়েন্টির লড়াইয়ে নামতে হবে।’
মন্তব্য করুন