বাজবলের মাধ্যমে ভারতকে প্রথম টেস্টে হারিয়ে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিল বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। পরিকল্পনা ছিল বিশাখাপত্তমে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে যাওয়ার। তবে জাসপ্রীত বুমরাহ ও যশস্বী জয়সওয়ালে ভর করে বড় জয়ে উল্টো সিরিজে সমতা নিয়ে আসে রোহিত শর্মার দল।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিশাখাপত্তনমে ভারত-ইংল্যান্ডের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে ৩৯৯ রানের তাড়ায় ২৯২ রানেই থামে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ফলে ১০৬ রানে জয় পেয়ে সিরিজে সমতায় ফিরল স্বাগতিক ভারত। তবে তৃতীয় দিন শেষেও ইংল্যান্ড যে টেস্ট থেকে পুরোপুরি ছিটকে গিয়েছিল তা কিন্তু বলা যাবে না। চতুর্থ দিনে জয়ের জন্য দরকার ছিল আরও ৩৩২ রান। হাতে ছিল ৯ উইকেট।
তবে চতুর্থ দিনে আর কাজের মতো কাজ করা হয়নি ইংলিশ ব্যাটারদের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের তোপে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ইংল্যান্ড। ওপেনার জ্যাক ক্রাওলি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন। ভারতের পক্ষে জাসপ্রীত বুমরাহ ১৭.২ ওভারে ৪৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট শিকার করেন। ১৮ ওভারে ৭২ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। এ ছাড়া মুকেশ কুমার, কুলদীপ যাদব ও অক্ষর প্যাটেল ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
এই টেস্ট জিততে হলে রেকর্ড করতে হতো প্রথম টেস্টে জয় পাওয়া ইংল্যান্ডকে। অবশ্য দুই বছর আগেই ভারতের বিপক্ষে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতে ইংলিশরা। আর ভারতের মাটিতে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটা ২০০৮ সালে। ইংল্যান্ডের দেওয়া ৩৮৭ রানের লক্ষ্য সফলভাবে তাড়া করেছিল ভারত। এই দুই রেকর্ড ভেঙে বিশাখাপত্তনমে জয় পেতে হতো ইংল্যান্ডকে।
কিন্তু জয়ের সম্ভাবনাও জাগাতে পারেনি বেন স্টোকসের দল। ভারতের বোলিং ডিপার্টমেন্টের সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে ইংলিশদের বাজবল।
গতকাল ডাকেটের বিদায়ের পর আজ নাইট ওয়াচম্যান রেহান আহমেদকে নিয়ে শুরুটা ভালোই করেছিলেন জ্যাক ক্রাওলি। দুজনে গড়েন ৪৫ রানের জুটি। ২৩ রান করা রেহানকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন অক্ষর প্যাটেল।
আগের ম্যাচের নায়ক অলি পোপ নেমে দ্রুত রান তুলছিলেন। কিন্তু অশ্বিনের অতিরিক্ত লাফিয়ে ওঠা বল পোপের ব্যাটের কানায় লেগে রোহিত শর্মার হাতে জমা পড়ে। ২১ বলে ২৩ রান করে ফেরেন পোপ।
ইংল্যান্ড বড় ধাক্কা খায় ১৬ বল পরেই। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট চালাতে থাকা জো রুট অশ্বিনের বলে ধরা পড়েন অক্ষরের হাতে। ১০ বলে ১৬ রান করেন রুট, দলের স্কোর তখন ১৫৪ রানে ৪ উইকেট।
পরের ১০ ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। ধীরে চলো নীতিতে এগুচ্ছিলেন ক্রাওলি-জনই বেয়ারস্টো। কিন্তু কুলদীপ যাদব ক্রাওলিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে এই জুটি ভাঙেন। ১৩২ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৭৩ রান করেন ক্রাওলি। ইংল্যান্ডের সংগ্রহ তখন ১৯৪। পরের ওভারেই কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউটে কাটা পড়েন ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ১১ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক। ইংল্যান্ডের জয়ের শেষ সম্ভাবনাটুকুও ততক্ষণে শেষ।
তবে এরপরেই দপ করে জ্বলে ওঠে ইংল্যান্ড। তাতে অবশ্য শুধু হারের ব্যবধানটাই কমেছে কিছুটা। বেন ফোকস ও টম হার্টলি মিলে ৫৫ রানের জুটি গড়েন। ২৭৫ রানের মাথায় বুমরাহ ফোকসকে আউট করে এই জুটি ভাঙেন। ৬৯ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রান করেন। এরপরে হার্টলি একাই লড়তে থাকেন। ২৯২ রানের মাথায় শেষ উইকেট হিসেবে বুমরাহর শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৬ রান করেন তিনি।
মন্তব্য করুন