বাংলাদেশের প্রিমিয়ার ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগের (বিপিএল) দশম আসর শুরুর আগে শিরোপার দাবিদার হিসেবে সবচেয়ে যোগ্য ভাবা হচ্ছিল দুটি দলকে, গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও এবারের তারকা দিয়ে ভরা দল রংপুর রাইডার্স। ভাবা হচ্ছিল বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ারেই মুখোমুখি হবে দল দুটি। বিপিএলের গ্রুপ পর্ব শেষে ঠিক তাই হয়েছে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে গ্রুপ পর্বের টেবিল টপার ও তারকা নির্ভর রাইডার্সদের পাত্তাই দিলো না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। তাওহিদ হৃদয়-লিটন দাসের ব্যাটে চড়ে ৮ উইকেটের জয়ে ফাইনালের টিকিট পেল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। তবে রংপুরের জন্যও থাকছে দ্বিতীয় সুযোগ। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ২৮ ফেব্রুয়ারি ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি হবে তারা।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান তোলে রংপুর। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৯৭ রান করেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। জবাবে খেলতে নেমে অধিনায়ক লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়ের অর্ধ শতকে ৯ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় কুমিল্লা।
অবশ্য চ্যালেঞ্জিং এই রান তাড়ায় কুমিল্লার শুরুটা ভালো ছিল না। নিশাম ঝড়ের পর ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই সুনীল নারিনের উইকেট হারায় তারা। ফজলহক ফারুকির বলে উইকেটকিপার নুরুল হাসান সোহানেরে দুর্ান্ত ক্যাচে কোন রান না করেই ফেরেন এই উইন্ডিজ অলরাউন্ডার।
এরপরের সময়টা অবশ্য পুরোটাই কুমিল্লার। দুই ব্যাটার লিটন ও তাওহীদ হৃদয় রংপুরের বোলারদের ওপর রীতিমতো ছড়ি ঘুরিয়েছেন। অধিনায়কত্ব পেয়ে শুরুটা ভয়াবহ হলেও গত কয়েক ম্যাচে লিটন অধিনায়কত্বের সাথে ব্যাট হাতেও অপ্রতিরোধ্য। এদিনও আরেক ইনফর্ম ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে ৮৯ বলে ১৪৩ রানের বড় জুটি গড়েন।
৪৩ বলে ৫ চার ও ৪ ছয়ে ৬৪ রান করে আবু হায়দারের বলে তাওহীদ বিদায় নিলে এই জুটি ভাঙে। হৃদয় বিদায় নিলেও অধিনায়ক লিটন কুমিল্লাকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে থাকেন।
দলীয় ১৬১ রানে বিদায় নেন জনসন চার্লস। ফারুকির শিকারে পরিণত হওয়ার আগে অবশ্য ৩ বলে ১০ রানের ক্যামিওতে কাজ করে দিয়ে যান তিনি। দলের খাতায় আর ১২ রান যোগ হতেই অধিনায়ক লিটনও বিদায় নেন। জয়ের জন্য তখন অবশ্য ১৩ বলে মাত্র ১৩ রান দরকার কুমিল্লার। শেখ মাহেদী হাসানের বলে নিশামের হাতে ধরা পড়ার আগে ৫৭ বলে ৯ চার ও ৪ ছয়ে ৮৩ রান করেন তিনি।
কুমিল্লার অধিনায়ক বিদায় নিলে বাকি রানটুকু তুলতে মাত্র ৪ বল খরচ করেছেন দুই বিদেশি রিক্রুট মঈন আলি ও আন্দ্রে রাসেল। ফারুকিকে চার ও ছয় মেরে জয় নিশ্চিত করেন মঈন। ৬ বলে ১টি করে চার ও ছয়ে ১২ রান করেন তিনি। রাসেল ২ রানে অপরাজিত থাকেন।
রংপুরের পক্ষে ফজলহক ফারুকি ৩.৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। আবু হায়দার ও মেহেদী হাসান একটি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৭ রানে তিন উইকেট হারালেও জিমি নিশামের অপরাজিত ৯৭ রানে বড় সংগ্রহ গড়ে রংপুর। দারুণ ব্যাটিং করলেও শেষটায় তার খানিকটা আফসোস থাকতে পারে! সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েও মাইলফলক ছুঁতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৯৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন এই কিউই।
মন্তব্য করুন