বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক ম্যাচগুলো দেখে একটা প্রশ্ন বারবার উঠে আসছে—মেসি কি এখন পুরো ম্যাচের নয়, বরং ম্যাচের শেষ ভাগের জন্য রিজার্ভ করে রাখার মতো একজন ‘সুপার সাব’?
বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে, যেখানে কয়েকদিন পরপর ম্যাচ, সেখানে দলের সেরা অস্ত্রকে ক্লান্তির মুখে না ফেলে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে বলে মনে করছে আর্জেন্টিনার সংবাদমাধ্যম টিওআইসি স্পোর্টস। যেমনটা দেখা গেছে অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার ক্ষেত্রেও—গত আসরে তিনিই শেষ দিকে নেমে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিলেন।
চিলির বিপক্ষে আগের ম্যাচে বদলি হিসেবে কিছুটা সময় খেলে ছিলেন মেসি। আর কলম্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নেমেও প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই নিজেই বদলি চেয়ে নেন, যদিও তখন আর্জেন্টিনা পিছিয়ে ছিল। এই বিষয়টি নতুন বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে?
বর্তমান স্কোয়াডের পারফরম্যান্স বলছে, মাঝমাঠে পারেদেসকে ৫ নম্বরে রেখে সামনে ডি পল, ম্যাক অ্যালিস্টার, এনজো ফার্নান্দেজের মতো মিডফিল্ডারদের নিয়ে দল জমে উঠছে। আক্রমণে থিয়াগো আলমাদা ও জুলিয়ান আলভারেজ আছেন ফর্মে। এই সমীকরণে মেসি যেন এখন ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিটের জন্য তোলা এক ‘গোপন অস্ত্র’—যখন প্রতিপক্ষ ক্লান্ত, তখন এসে ফারাক গড়ে দিতে পারবেন তিনিই।
মেসির পারফরম্যান্স বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, কলম্বিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধের সময়টাতেই সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছেন তিনি। প্রতিপক্ষ ক্লান্ত, আর তিনিও তখন খোলস ছেড়ে বের হচ্ছেন। তাই, বড় ম্যাচে, বিশেষ করে ফাইনালে, তিনি অবশ্যই একাদশে থাকবেন—এটা নিয়ে সংশয় নেই। তবে বিশ্বকাপের মতো ব্যস্ত সূচিতে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে থাকা এই মহাতারকাকে সঠিক ব্যবস্থাপনা করাই বা দোষের কী?
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো কোচ লিওনেল স্কালোনির সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা। চিলির বিপক্ষে ম্যাচে মেসি নিজে খেলতে চাইলেও স্কালোনি তাকে বেঞ্চে রেখেছিলেন। এতে বোঝা যায়, দলের প্রয়োজনে তিনি কারো চাওয়ার তোয়াক্কা করেন না—সেটা মেসি হলেও না!
মেসিকে ম্যাচের শেষ দিকে নামানো মানে প্রতিপক্ষের গায়ে বজ্রাঘাত। ক্লান্ত ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিতে তিনি তখন আরও ভয়ঙ্কর। বিশ্বকাপে এমন কৌশল কী কাজে দেবে? সময়ই তা বলবে। তবে এটুকু নিশ্চিত, মেসি এখনো ম্যাচের ভাগ্য গড়ার ক্ষমতা রাখেন—হোক সেটা শুরু থেকে, বা শেষ ৩০ মিনিটে এসে!
মন্তব্য করুন