ম্যাচের আগেই আগুন ছড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, মেসিকে আটকাতে পারলেই করবেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিখ্যাত ‘সিইউ’ সেলিব্রেশন। কারণ তিনি নিজেকে 'টিম সিআর৭'-এর সদস্য বলেই গর্ব করেন। কিন্তু বাস্তবতা যেন একটু বেশিই নির্মম ছিল ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মুরিলোর জন্য।
ইন্টার মায়ামির বিপক্ষে ক্লাব বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে মাঠে নামার মাত্র ১৬ মিনিট পরই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। চোটে কাতর হয়ে!
ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের সামনে মেসি প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন মুরিলো, ‘আমি টিম সিআর৭। রোনালদোর শৃঙ্খলা, তার আত্মবিশ্বাস, সবকিছুই আমার কাছে অনুপ্রেরণা। যদি গোল করতে পারি, তাহলে অবশ্যই রোনালদোর মতো উদযাপন করব।’
কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! প্রথমার্ধেই লুইস সুয়ারেজের চেস্ট পাস থেকে দারুণ গতিতে এগিয়ে যান তাদেও আলেন্দে। সামনে কোনো ডিফেন্ডার না থাকায় পালমেইরাস রক্ষণে তুমুল ব্যস্ততা। মেসিকে নয়, এই আলেন্দেকেই থামাতে গিয়ে চোটে পড়ে যান মুরিলো। মাংসপেশিতে টান লাগার পর আর মাঠে ফিরতে পারেননি তিনি। আর তখনই ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় মায়ামি।
যদিও মুরিলো ছিলেন ‘টিম সিআর৭’-এর প্রতিনিধিত্বে দৃঢ়, তার কিছু সতীর্থ মেসির প্রতি রেখেছেন ভক্তিভাব। পালমেইরাসের ফুল-ব্যাক ভ্যান্ডারলান বলেন, ‘আমি তো আসলে মেসিরই ভক্ত। ছোটবেলা থেকে তার খেলা দেখে বড় হয়েছি। কিন্তু মাঠে এসব চলে না, আমরা প্রতিপক্ষ। মেসিকে থামাতে হলে দলীয়ভাবে ভালো খেলতেই হবে।’
ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে। সুয়ারেজের চোখ ধাঁধানো এক গোলের পর ২-০ তে এগিয়ে যায় মায়ামি। তবে শেষ দশ মিনিটে পালমেইরাসের পলিনহো ও বদলি খেলোয়াড় মৌরিসিও গোল করে ম্যাচটা ২-২-এ সমতায় আনেন। ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে পালমেইরাস। তাদের প্রতিপক্ষ ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগো। আর দ্বিতীয় হওয়ায় ইন্টার মায়ামির সামনে এখন এক মহাসমর—পিএসজির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মেসির দল।
মুরিলোর ঘটনা যেন মনে করিয়ে দেয়, ফুটবলে বড় বড় কথা নয়, মাঠের কাজই আসল। মেসিকে চ্যালেঞ্জ করার আগে ভাবতে হয়—তিনি ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়। আর যারা চ্যালেঞ্জ করেন, তাদেরও প্রস্তুত থাকতে হয় সেই উচ্চতায় উঠতে। না হলে ১৬ মিনিটেই ম্লান হয়ে যেতে পারে সব বড়াই।
ক্লাব বিশ্বকাপের উত্তাপ শুধু ফুটবলের নয়, আবেগ আর অহংকারেরও। আর মেসিকে চ্যালেঞ্জ? সে খেলায় হারলে ব্যথা শুধু শরীরে নয়, সম্মানেও লাগে।
মন্তব্য করুন