লেকের জলে বাতির প্রতিফলন, ওপেন স্টেজজুড়ে পতাকার রং- সাদা, নীল আর লাল। সন্ধ্যা নামতেই ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর হয়ে উঠল এক টুকরো সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। রুশ রাষ্ট্রীয় পতাকা দিবস উদযাপনে রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকা আয়োজন করেছিল বর্ণাঢ্য কনসার্ট; ভিড়ে উপচে পড়ে চারদিক, বসার জায়গা ছাপিয়ে মানুষ দাঁড়িয়ে শুনেছে গান।
মঞ্চে প্রথমেই উঠল দেশীয় জনপ্রিয় ব্যান্ড সোনার বাংলা সার্কাস। ভোকাল প্রবর রিপন পরিচিত হুক তুলে ধরতেই দর্শক-শ্রোতারা তাল ধরল হাততালিতে। তাদের বহুলশ্রুত গান ‘অন্ধ দেয়াল’ শুরু হওয়া মাত্রই ওপেন স্টেজ একসঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গাইতে থাকল—কেউ মোবাইলে ভিডিও করছে, কেউ বা বন্ধুদের কাঁধে হাত রেখে নেচে উঠছে। গান শেষে ‘আরেকটা, আরেকটা’- চেনা স্লোগান শোনা গেল লেকপাড়জুড়ে।
এরপর মঞ্চে রাশিয়ান ভাষায় পরিবেশিত উচ্ছ্বাস ভরা গানটিতে বিদেশি সুরের সঙ্গে বাংলা শ্রোতাদের হাততালি মিশে গেল। ভাষা আলাদা- তবু সুরের সেতুতে যুক্ত হলো দুই সংস্কৃতি। আবারও মঞ্চে ফেরে সোনার বাংলা সার্কাস; ধারাবাহিকভাবে আরও কয়েকটি গান পরিবেশনে শেষ ভাগ পর্যন্ত উত্তাপ ধরে রাখে তারা।
স্টেজের পিছনে পতাকার মোটিফ, সামনে মৃদু স্মোক, লেকপাড়ে রঙিন ফেয়ারিলাইট- সব মিলিয়ে ছিল উৎসবের আবহ। বাচ্চাদের হাতের ছোট পতাকা, কিশোর-কিশোরীদের সেলফি, বয়স্কদের নিরিবিলি বসে গান শোনা- সবচিত্র এক সন্ধ্যার।
আয়োজনটি করেছে রাশিয়ান হাউস ইন ঢাকা। সহযোগিতায় ছিল রাশিয়ান কমপ্যাট্রিয়টস অ্যাসোসিয়েশন ‘রদিনা’, সোভিয়েত অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এসএএবি), রাশিয়ান ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি উইথ বাংলাদেশ এবং ধানমন্ডি সোসাইটি। বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে। নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকেই দর্শক ঢুকতে শুরু করে; শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্র সরোবরের কোনায় কোনায় ছিল উপচে পড়া ভিড়।
সংস্কৃতির ভাষা এক- এদিন লেকপাড়ে সেটাই প্রমাণ হলো আরেকবার; রুশ পতাকার রঙে রাঙানো সন্ধ্যায় বাংলা গানের সুর মিশে গেল অনায়াসে।
মন্তব্য করুন