আন্তর্জাতিক ফুটবলে এমন কিছু নাম আছে, যারা শুধু মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, বড় ম্যাচে নিজেদের উপস্থিতি দিয়েই প্রতিপক্ষের ভেতরে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করে দেন। আর্জেন্টিনার তরুণ মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ ঠিক তেমনই একজন। ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেইকে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে প্রমাণ করলেন—বড় ফাইনালে হারেন না এনজো।
নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে রোববার রাতে অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে চেলসি শুরু থেকেই আধিপত্য দেখায়। প্রথমার্ধেই তিন গোল করে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে ফেলে ইংলিশ জায়ান্টরা। কোল পালমারের জোড়া গোল আর জোয়াও পেদ্রোর চোখধাঁধানো এক গোল মিলিয়ে প্রতিপক্ষের স্বপ্ন ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। তবে মাঠের মাঝমাঠে সবকিছুর ছন্দ বেঁধে রেখেছিলেন এনজো ফার্নান্দেজ। তার সঠিক পাস, বল কন্ট্রোল আর ধৈর্যশীল খেলার কারণে চেলসির আক্রমণাত্মক ছন্দ আরও ধারালো হয়ে ওঠে।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর আবেগে ভেঙে পড়েন এনজো। পরিবারের সদস্যদের গ্যালারিতে দেখে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারেননি। সতীর্থদের সঙ্গে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার আগেই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে বিজয়ের অশ্রু। সেই মুহূর্তের ছবি এখন ভাইরাল সামাজিক মাধ্যমে।
এই জয় দিয়ে এনজোর আন্তর্জাতিক ফাইনাল রেকর্ড আরও দৃঢ় হলো। জীবনের প্রতিটি বড় ফাইনালে মাঠে নেমেছেন, আর প্রতিটি ফাইনালেই শিরোপা হাতে ফিরেছেন। এমন অভূতপূর্ব সাফল্য খুব কম ফুটবলারেরই আছে।
এনজোর জেতা ফাইনালের তালিকা:
ক্লাব ও দেশের হয়ে এই অর্জন এনজোকে এনে দিয়েছে বিশেষ সম্মান। এখন তিনি বিশ্বের একমাত্র ফুটবলার, যিনি জাতীয় দল ও ক্লাব—উভয় ক্ষেত্রেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে মাঠে ফিফা প্যাচ পরার সম্মান অর্জন করেছেন।
তবে এই গল্পের মধ্যেও কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। চেলসির হয়ে একমাত্র ব্যর্থতা ছিল ২০২৩/২৪ মৌসুমের কারাবাও কাপ ফাইনালে লিভারপুলের কাছে হারা। তবে সাম্প্রতিক সাফল্য সেই ক্ষত পুরোপুরি মুছে দিয়েছে।
এনজোর এমন অবিশ্বাস্য রেকর্ড ফুটবলবিশ্বে তাকে এক বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে গেছে। প্রতিটি ফাইনালে যেন নিজের মেধা, দক্ষতা ও মানসিক দৃঢ়তা দিয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শুধু ট্রফি জেতা নয়, মাঠে তার প্রতিটি পদক্ষেপেই ফুটে ওঠে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্ববোধ।
মন্তব্য করুন