মনুমেন্টালের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ডে জড়ো দর্শক, পরিবারের আবেগঘন উপস্থিতি আর দুটি চমৎকার গোল—এসব মিলিয়ে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার মাটিতে শেষ অফিসিয়াল কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি এক ধরনের পার্টি ও বিদায়ের মিশেল হয়ে উঠল। ম্যাচ শেষে ভক্তদের কণ্ঠস্বর আর মেসির চোখে যে আর্দ্রতা ছিল, সেটাই আজকের খবরের মূল চিত্র।
মেসি বললেন ম্যাচ শেষে, কণ্ঠে মিশ্র আবেগ নিয়ে বলেন, ‘এভাবে শেষ করা—এটাই সবসময় আমার স্বপ্ন ছিল।’ ম্যাচটি ৩-০ আর্জেন্টিনার পক্ষে শেষ হয়; মেসি দুটি গোল করে নিজেই ফাইনালে স্বাক্ষর রাখলেন। কিন্তু ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত অংশ হয়ে দাঁড়াল তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সেই জটিল, যদিও সরল, একটা বাক্য ‘দেখা যাক।’
মেসিকে পরের বিশ্বকাপ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি খেলতে চাই—আমি মোটেও তা অস্বীকার করছি না—কিন্তু বয়সেরও তো একটা ব্যাপার আছে। সবচেয়ে যৌক্তিক হয়তো হবে না ভাবা যে আমি আবার খেলব। তবু আমি প্রতিদিন দেখি, কেমন লাগছে। ভালো লাগলে উপভোগ করছি, না লাগলে থাকব না—সেই নিয়মটাই। তাই এখনই সিদ্ধান্ত নেই নি; ‘দেখা যাক’।
তিনি নিজের শরীরের প্রতি সতর্কতাও দেখিয়েছেন: ‘ম্যাচ থেকে ম্যাচ, দিন থেকে দিন—আমি কেবল আমার শরীরের কথা শুনছি। পুরো সিজন শেষ করব, প্রি-সিজন থাকবে, তখনই ঠিক করব কেমন অনুভব করছি।’
এ ধরনের বাস্তববাদী সরলতা আর দায়িত্ববোধ তাকে ভক্তদের সামনে কেমন খোলামেলা করে তুলছে—সেটা স্পষ্ট।
এদিকে মেসি জানান যে, ইকুয়েডরের বিপক্ষে গুইয়াকিলে শেষ কোয়ালিফায়ারে তিনি খেলবেন না। তার অন্য কারণ থাকতে পারে তবে হয়তো তিনি আর্জেন্টিনার মাটিতে আইকনিক বিদায়ের চিহ্ন ফুটিয়ে দিলেন এর মাধ্যমে।
ফুটবল ইতিহাসে মেসি দীর্ঘদিন ধরে আর্জেন্টিনার মাস্টার—সর্বোচ্চ গোলদাতা, এবং দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলের নায়ক। ২০০৬ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে বিশ্বকাপে অভিষেক; এরপর ২০১৪ ও ২০২২—সেই কাহিনিই তাকে আজকের মঞ্চে এনে দাঁড় করিয়েছে। আর এখন—বয়স, ফিটনেস আর পরিবারের মতো বাস্তব বিষয়গুলো নিয়ে তিনি নিজে সংযমিত রয়েছেন।
সবশেষে—ভক্তরা কি ক্লান্ত বন্ধুর মতো তার ফুটবলের বিদায় চান নাকি আরও একবার বিশ্ববড় মঞ্চে তাকে দেখতে চান? মেসির উত্তর ছিল সংক্ষিপ্ত, মানবিক এবং বাস্তব: ‘দেখা যাক।’
মন্তব্য করুন