আর্জেন্টাইন জাতীয় দলে আসলেই শুরু হয়েছে প্রজন্ম বদলের সুর। মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে লিওনেল মেসি যখন শেষবারের মতো বাছাইপর্ব খেললেন দেশের মাটিতে, ঠিক তখনই তার সতীর্থ নিকোলাস ওটামেন্ডিও জানালেন একই খবর—এটাই আর্জেন্টিনায় তার শেষ নৃত্য।
টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওটামেন্ডি বললেন, ‘যদি জাতীয় দলের হয়ে আর কোনো অফিসিয়াল ম্যাচ দেশে না হয়, তবে এটাই আমার শেষ ম্যাচ আর্জেন্টিনায়। দ্য শো মাস্ট গো অন।’
নিজের দীর্ঘ পথচলার সারসংক্ষেপ দিতে গিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমরা খারাপ সময়ও পার করেছি, আবার এখন সাফল্যের স্বাদও পাচ্ছি। জাতীয় দলে কখন কী ঘটে বলা যায় না, তাই সবসময় লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেসিকে জড়িয়ে ধরা একটি ছবি পোস্ট করে ওটামেন্ডি আবারও লিখলেন সেই একই কথা— ‘দ্য শো মাস্ট গো অন, ডোয়ার্ফ।’ মেসি আর ওটামেন্ডি, দুই অভিজ্ঞ সেনানায়ক, যেন একসাথে বললেন বিদায়ের কথা।
২০০৯ সালের মে মাসে দিয়েগো ম্যারাডোনার কোচিংয়ে অভিষেক ঘটে ওটামেন্ডির। তারপর থেকে আলবিসেলেস্তের হয়ে খেলেছেন ১২৬ ম্যাচ, যা তাকে এনে দিয়েছে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড। তার সামনে আছেন কেবল মেসি, মাশ্চেরানো, ডি মারিয়া আর জানেত্তি।
এই সময়ে ওটামেন্ডি জয় করেছেন চারটি বড় শিরোপা—দুটি কোপা আমেরিকা, একটি ফাইনালিসিমা এবং সর্বোপরি ২০২২ সালের বিশ্বকাপ। স্কালোনির যুগে তিনিও ছিলেন দলের ভরসা, “এল জেনারেল” হিসেবে যিনি আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন নির্ভীকভাবে।
গত বছর কলম্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পর এএফএ তাকে ১৪০তম ম্যাচ খেলার স্বীকৃতি দিয়ে বিশেষ জার্সি উপহার দিয়েছিল। যদিও পরিসংখ্যান নিয়ে কিছু বিতর্ক আছে—অলিম্পিকে খেলা ম্যাচগুলো যোগ করায় সংখ্যায় পার্থক্য দেখা দিয়েছে। তবে তা যাই হোক, জাতীয় দলের জার্সিতে ওটামেন্ডির উত্তরাধিকার অমলিনই থেকে যাবে।
মেসির মতোই, ওটামেন্ডির বিদায়ও আর্জেন্টাইন ফুটবলে প্রজন্ম বদলের ইঙ্গিত দিল। তবে মাঠে তাদের রেখে যাওয়া স্মৃতি, আবেগ আর সাফল্য চিরকাল বয়ে বেড়াবে আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাস।
মন্তব্য করুন