গাজা উপত্যকায় চলমান সংঘাতের মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপ বাড়ছে ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে নির্বাসিত করার। তবে বাস্তবে এখনই এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে হাঁটছে না ফিফা কিংবা উয়েফা। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মার্কা জানিয়েছে, দেশটির জাতীয় দল কিংবা ক্লাবগুলোকে প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ আপাতত নেই তাদের কর্মসূচিতে।
আগামী দুই সপ্তাহে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে নরওয়ে ও ইতালির বিপক্ষে খেলবে ইসরায়েল। ইউরোপীয় ফুটবলে দেশটির উপস্থিতি ঠেকাতে উদ্যোগ নিয়েছে কিছু ফেডারেশন, তবে সেই দাবির প্রতিফলন ঘটেনি কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনায়। উয়েফার নির্বাহী কমিটি এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেনি; বরং বিষয়টি সর্বোচ্চ ডিসেম্বরের কর্মসূচিতে তোলা হতে পারে।
ফিফার পক্ষ থেকেও পরিষ্কার জানানো হয়েছে, ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ বাছাই থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ আপাতত তাদের কাউন্সিলের এজেন্ডায় নেই।
এ ছাড়াও ফুটবল দুনিয়ার এই আলোচনায় বড় রাজনৈতিক ছায়া ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সম্পর্ক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যেই ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে যৌথভাবে শান্তি পরিকল্পনার প্রস্তাব দেওয়াও সে অবস্থানেরই প্রতিফলন। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরায়েলের অবস্থান শক্ত থাকাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।
তবে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অত সহজও নয়। অলিম্পিক আন্দোলনের সঙ্গেও এ প্রসঙ্গ জড়িয়ে আছে। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) এরই মধ্যেই জানিয়েছে, ইসরায়েল চার্টারের শর্ত মান্য করায় তাদের নির্বাসিত করা সহজ নয়। একই সুর ফিফা ও উয়েফার অভ্যন্তরীণ সূত্রের বক্তব্যেও প্রতিফলিত হয়েছে বলে জানিয়ছে মার্কা।
তবে অস্বস্তি যে বাড়ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ইউরোপের মাঠে যেমন মাকাবি তেল আবিব ইউরোপা লিগে নিয়মিত খেলছে, তেমনি জাতীয় দলকেও এখন পর্যন্ত কোনো বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে না।
তাহলে সামনে কী? যদিও এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি; কিন্তু আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি বদলাতে পারে। এক্ষেত্রে উয়েফা নির্বাহী কমিটির সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটেই বহিষ্কার সম্ভব। তবে বাস্তবতা হলো—আপাতত ইসরায়েল ফুটবলে তাদের অবস্থান অটুট রেখেছে, যদিও ক্রীড়াঙ্গন ও রাজনীতির এই অস্বস্তিকর টানাপোড়েন আরও দীর্ঘায়িত হওয়ার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন