

২৪ বছর ধরে বিশ্বকাপ ট্রফিকে শুধু দূর থেকে হাত নেড়ে বিদায় জানায় ব্রাজিল। ফুটবল দুনিয়ার সৌন্দর্যের প্রতীক সেই দলটাই যেন বারবার এসে আটকে গেছে শেষ ধাপে। কিন্তু এবার সেলেসাও শিবিরে অন্যরকম এক গন্ধ—নির্ভার আত্মবিশ্বাস, কাঠামোবদ্ধ ফুটবল এবং একজন ইতালীয় জাদুকরের শান্ত উপস্থিতি। আর সেই পরিবর্তনের মুখ হয়ে দাঁড়িয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের সুপারস্টার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
তিনি সরাসরি বলে দিয়েছেন— ‘আমাদের সুযোগ এসে গেছে। এখনই বিশ্বকাপের মানসিকতায় ঢুকতে হবে।‘
কিন্তু কেন এত দৃঢ় শোনাচ্ছে তার কণ্ঠে? কারণ, কার্লো আনচেলত্তি।
রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে ব্রাজিলের জাতীয় দলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনেকেই অবাক হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই স্পষ্ট—এই সিদ্ধান্তই বদলে দিয়েছে ব্রাজিলের ফুটবল-সংস্কৃতি। ছয় ম্যাচে তিন জয়ে সহজেই নিশ্চিত করা হয়েছে ২০২৬ বিশ্বকাপ, এবং ভিনিসিয়ুস মনে করেন—এই দল এখন আগের থেকে বেশি “পরিষ্কার ও ভারসাম্যপূর্ণ”।
সিবিএফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন—“আনচেলত্তি আমাদের খেলার পরিচয়টা আরও পরিষ্কার করে দিচ্ছেন। বিশ্বকাপের আগে এই ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শান্তি দেন, আত্মবিশ্বাস দেন। আমরা শুধু জিতলেই তার কাজের প্রকৃত মূল্য বোঝা যাবে।”
ইতালীয় এই কোচ খেলোয়াড়দের ‘স্বাভাবিক পজিশন’-এ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অদ্বিতীয়—যা ভিনিসিয়ুস থেকে রদ্রিগো, এমনকি নবাগত এন্ড্রিকদের ওপরও প্রভাব ফেলছে।
আনচেলত্তির ব্রাজিলে জায়গা হয় ফর্ম ও ফিটনেস-এর ভিত্তিতে। নাম বড় হওয়া কিংবা আগের খ্যাতি আর নয়—এই নীতি প্রয়োগ করতে গিয়ে তিনি এক পর্যায়ে দলে রাখেননি ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো কিংবা নেইমারের মতো তারকাদেরও।
তিনি বলেছেন—প্রায় ৭০ জন খেলোয়াড় তার বিবেচনায় আছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের জন্য। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়ছে, দল হচ্ছে আরও ক্ষুধার্ত।
এই পরিবর্তনের সবচেয়ে আলোচিত প্রশ্ন—নেইমার কি ২০২৬ বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলে থাকবেন?
ঘনঘন চোট—উরু, হাঁটু, রেক্টাস ফেমোরিস—সব মিলিয়ে ফিরে আসাটা কঠিন হয়ে গেছে। নেইমার দাবি করেন, সাম্প্রতিক বাদ পড়া ছিল “টেকনিক্যাল”, শারীরিক নয়। কিন্তু সন্দেহ থেকেই যায়।
তবে কিংবদন্তি রোনালদোর বিশ্বাস স্পষ্ট:“সে ফিট থাকলে ব্রাজিল আরও শক্তিশালী হয়। আমাদের আরেকটা নেইমার নেই।”
সান্তোসে নিয়মিত খেলছেন তিনি, চুক্তিও বাড়িয়ে ২০২৫ পর্যন্ত নিয়েছেন—বিশ্বকাপের অপশনসহ।
মন্তব্য করুন