ম্যানচেস্টার সিটির টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ের মাধ্যমে শেষ হয়েছে প্রিমিয়ার লিগের ২০২৩-২৪ মৌসুম। প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা ম্যানসিটির হাতে ওঠার সঙ্গে মৌসুম শেষ হলেও এখনো মৌসুমের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়নি। পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা শিরোপার পাশাপাশি প্রিমিয়ার লিগ থেকে বেশ মোটা অঙ্কের অর্থ পুরস্কার পাবে, সেই সঙ্গে টিভি স্বত্ব থেকে আয় তো আছেই। তবে সিটিজেনরা সবচেয়ে বেশি আয় করলেও বাকি দলগুলোর কী অবস্থা? একনজরে দেখে নেওয়া যাক প্রিমিয়ার লিগের ২০ দল এবারের মৌসুম শেষ হওয়ায় কত টাকা পকেটে ভরেছে।
বিশ্বের অন্যতম ধনী লিগ হিসেবে এমনিতেই খ্যাতি আছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের। তাই স্বাভাবিকভাবেই ইউরোপের অন্য লিগগুলো থেকে বেশি অর্থ পাবে ইপিএলের দলগুলো।
প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে পয়েন্ট টেবিলে দলগুলোর অবস্থান উল্লেখযোগ্য আর্থিক প্রভাব বহন করে। প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট টেবিলের প্রতিটি স্থানের আনুমানিক মূল্য ৩.১ মিলিয়ন পাউন্ড বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ৪৬ কোটি টাকা।
প্রিমিয়ার লিগ মৌসুম শেষে দলগুলোর পারফরম্যান্সের জন্য তাদের পুরস্কৃত করে। এর আগের মৌসুমে, ম্যানচেস্টার সিটি শিরোপা জিতে ৬২.৩ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছিল বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ৯২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আর্সেনাল ৫৯.১ মিলিয়ন পাউন্ড অর্জন করে, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ৮৭৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর্থিক পুরস্কার পয়েন্ট টেবিলের প্রতিটি অবস্থানের জন্য আনুমানিক ৪৬ কোটি টাকা করে কমে। গত বছর তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ৫৬ মিলিয়ন পাউন্ড পায়, এবার সেই অর্থ যাবে লিভারপুলের পকেটে। চতুর্থ স্থানে থাকা অ্যাস্টন ভিলা পাবে ৫২.৯ মিলিয়ন পাউন্ড এবং এভাবে টেবিলের নিচে প্রত্যেক পজিশনের জন্য কিছু টাকা করে কমেছে।
টেবিলের সর্বশেষ দল হিসেবে গত মৌসুমে সাউদাম্পটন ৩.১ মিলিয়ন পাউন্ড পায়, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪৬ কোটি টাকা। আশা করা হচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ এই মৌসুমেও অনুরূপ কাঠামো অনুসরণ করবে। তাই সর্বশেষ দল হিসেবে শেফিল্ড প্রিমিয়ার লিগ থেকে এরকম অর্থ আশা করতে পারে।
পয়েন্ট টেবিলের অবস্থানের পাশাপাশি, প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবগুলি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রচার চুক্তি থেকেও টাকা পায়। ইংল্যান্ডের টিভিতে সম্প্রচারের জন্য প্রতি মৌসুমে ৩১ মিলিয়ন বা ৪৫৯ কোটি টাকার সমান পারিশ্রমিক পায়। এ ছাড়াও, আন্তর্জাতিক সম্প্রচার চুক্তি থেকে প্রতিটি ক্লাব অতিরিক্ত ৬৩ মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৯৩৩ কোটি টাকা পায়। সম্প্রচার এই চুক্তি নিশ্চিত করে যে টেবিলের নিম্ন অংশের দলগুলোও যাতে উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তা পায়।
তদুপরি, ক্লাবগুলো প্রতি অবস্থানের জন্য ৪৭৮,০০০ পাউন্ড উপার্জন করে, যা ২০তম স্থানে থাকা দলের সর্বনিম্ন পরিসংখ্যান থেকে শুরু হয়। ফলস্বরূপ, এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটি যারা গত মৌসুমের মতো প্রথমে থেকে শেষ করেছে তারা আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে প্রায় ৯.৫ মিলিয়ন পাউন্ড পেয়েছে।
এ ছাড়াও সব প্রিমিয়ার লিগ দল কেন্দ্রীয় পেমেন্ট হিসেবে ৬ মিলিয়ন পাউন্ড পায়। তবে অতিরিক্ত রাজস্ব টেলিভিশন সম্প্রচারের উপর ভিত্তি করে হয় যার ফলে বড় ক্লাবগুলোর আয় ছোট ক্লাবগুলোর চেয়ে অনেক বেড়ে যায়। ক্লাবগুলো প্রতিটি সরাসরি সম্প্রচারিত ম্যাচের জন্য প্রায় ১৮ কোটি টাকা পায়। এই মৌসুমে, ম্যানচেস্টার সিটি এবং আর্সেনাল এই বিভাগে সর্বাধিক উপার্জনকারী ছিল।
সব টিভি অর্থ বিবেচনায় নিয়ে, গত বছর ম্যানচেস্টার সিটির মোট আয় ১৪৩ মিলিয়ন বা প্রায় ২১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হওয়া দলগুলোও প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার বেশি নিয়ে নেমে গেছে।
মন্তব্য করুন