জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়। এ কথা অনস্বীকার্য যে, বাংলাদেশকে প্রকৃত অর্থে জানতে হলে বঙ্গবন্ধুকে জানতে হবে। তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িকতা পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব প্রতিহত করতে তিনি তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে সোমবার (১৪ আগস্ট) সংগঠনের সুফিয়া কামাল ভবন মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কোনো দলীয় রাজনীতি করে না। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীমুক্তির জন্য কাঙ্ক্ষিত সমাজ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে সংগঠন। সংগঠনের কাজের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন এক আদর্শ।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সব শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলোচনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি ও লবি পরিচালক অ্যাড. দীপ্তি শিকদার ও সিনিয়র ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসার্চ অফিসার শাহজাদী শামীমা আফজালী। বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই থেকে অংশবিশেষ পাঠ করেন প্রোগ্রাম অফিসার কেয়া রায়।
আলোচনায় ডা. মাখদুমা নার্গিস রত্না ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যার ঘটনাকে পৃথিবীর ইতিহাসে তথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক বর্বরোচিত ও চরম নৃশংসতম বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যারা সমাজ প্রগতির জন্য, দেশের জন্য লড়াই করেন তাদের অনেকেই প্রতিক্রিয়াশীলদের হাতে নিহত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকাণ্ডের বিচার রহিত করার জন্য সংসদে বিশেষ অধ্যাদেশ পাশ করা হয় যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। অথচ বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক ও সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমৃত্যু কাজ করেছেন। তিনি জনমানুষের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করেছেন; সাধারণ চাষি-মজুরসহ সব শ্রেণির মানুষকে আপন করে নিয়েছেন। মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও নারী এবং পরিবারের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা থেকেই তিনি দেশকে ভালোবাসতে শিখেছিলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের সব শহীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মন্তব্য করুন