

শিশুদের ঘাম দেখা খুব অস্বাভাবিক নয়, তবে যদি তারা বারবার বা অকারণে ঘামে, অনেক অভিভাবকই চিন্তায় পড়ে যান। আসলে এটি সব সময় ভয়াবহ রোগের লক্ষণ নয়, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি শরীরের ভেতরের সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তাই কারণ বুঝে প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ঘাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রাপ্তবয়স্কদের মতো শিশুদের ঘর্মগ্রন্থি সম্পূর্ণ বিকশিত নয়, তাই সাধারণ অবস্থায় তারা খুব বেশি ঘামে না। তবে কখনো যদি শিশু স্বাভাবিক পরিবেশে থেকেও বারবার ঘামে, তা নজরে রাখা প্রয়োজন।
ইংল্যান্ডের চিকিৎসক ড. সারমেদ মেজেরে জানিয়েছেন, ঘরের তাপমাত্রা বেশি হলে বা শিশুকে অতিরিক্ত কাপড় পরিয়ে রাখলে হালকা ঘাম হতে পারে—এটি স্বাভাবিক। কিন্তু আরামদায়ক পরিবেশে থেকেও যদি শিশু খাওয়ার সময় বা ঘুমের সময় ঘামে, সেটি শরীরের ভেতরের কোনো সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
থাইরয়েডের সমস্যা: থাইরয়েড হরমোন বেশি মাত্রায় উৎপন্ন হলে শিশু বেশি ঘামতে পারে। এ অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হাইপারহাইড্রোসিস (Hyperhidrosis): এটি এমন একটি অবস্থা, যেখানে শিশুর ঘর্মগ্রন্থি অতিরিক্ত সক্রিয় থাকে। ফলে হাতের তালু, মাথা, মুখ বা বগলে অস্বাভাবিক ঘাম দেখা দেয়।
জন্মগত হৃদরোগ: যদি শিশুর হার্টের সমস্যা থেকে জন্ম হয়, তাহলে ঘাম বেশি হওয়া তার একটি লক্ষণ হতে পারে।
সিস্টিক ফাইব্রোসিস: জিনগত কারণে হওয়া এই রোগেও শিশুর শরীর বেশি ঘামতে পারে।
শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ: শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসে সংক্রমণ থাকলে শিশুর অতিরিক্ত ঘাম হতে পারে।
- শিশুকে অতিরিক্ত কাপড় পরাবেন না।
- ঘর সবসময় বাতাস চলাচলযোগ্য রাখুন।
- শিশুর শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করুন।
- ঘাম বেশি হলে বা অস্বাভাবিক মনে হলে অবশ্যই শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সব শিশুর শরীর একরকম নয়। তাই মাঝে মাঝে ঘামলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে যদি শিশুর ঘাম দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্য উপসর্গও দেখা দেয়, তখন দেরি না করে চিকিৎসকের শরণ নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।
সূত্র: প্রতিদিন ইন
মন্তব্য করুন