

শীতের সকালে এক কাপ গরম কফির চেয়ে আরামদায়ক কিছুই নেই। অনেকেই ভাবেন, কোল্ড কফির তুলনায় গরম কফি শুধু পছন্দের ব্যাপার, কিন্তু আসলে শরীর দুটো কফিতে আলাদা প্রতিক্রিয়া দেখায়। পাচন, রক্তসঞ্চালন, এমনকি মুড—সব ক্ষেত্রেই কিছু পার্থক্য দেখা যায়।
চলুন দেখে নিই, গরম ও ঠান্ডা কফির প্রভাব কেমন ভিন্ন হতে পারে।
পাচন ও বিপাকক্রিয়া বাড়ায় : গরম কফি শুধু আরাম দেয় না, হজমেও সাহায্য করে। এর উষ্ণতা অন্ত্রের পেশি শিথিল করে, ফলে খাবার সহজে হজম হয় ও মেটাবলিজম বাড়ে। বিশেষজ্ঞ ডা. অর্চনা বাত্রা বলেন, গরম পানীয় শীতকালে পেট ফাঁপা বা হালকা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
রক্তপ্রবাহ বাড়ায় ও শরীর গরম রাখে : ঠান্ডা কফির তুলনায় গরম কফি শরীরের ভেতর থেকে উষ্ণতা বাড়ায়। এটি রক্তনালিগুলোকে প্রশস্ত করে, ফলে রক্তসঞ্চালন ভালো হয় এবং শরীর উষ্ণ থাকে। তাই সকালে গরম কফি মন ও শরীর দুটোই সতেজ রাখে।
অম্লতা বাড়াতে পারে : গরম কফিতে অম্লীয় উপাদান কিছুটা বেশি থাকে, যা সংবেদনশীল ব্যক্তিদের পেটে জ্বালা বা হার্টবার্ন তৈরি করতে পারে। তবে ঠান্ডা কফিও কখনো কখনো হজমে অস্বস্তি আনতে পারে। তাই গরম কফি ধীরে ধীরে পান করাই ভালো—এতে শরীর সহজে মানিয়ে নেয় এবং অ্যাসিডিটির ঝুঁকি কমে।
মন ভালো রাখে : গবেষণায় দেখা গেছে, গরম পানীয় সেরোটোনিন ও অক্সিটোসিনের মতো ‘ভালো লাগার’ হরমোন বাড়ায়। তাই এক কাপ গরম কফি শুধু শরীর নয়, মনকেও সতেজ করে তোলে।
পানিশূন্যতার ঝুঁকি : গরম কফি শরীর থেকে তরল বের করে দেয়, অর্থাৎ এটি হালকা ডাইইউরেটিক। তাই কফির সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত পানি বা হারবাল চা পান করা জরুরি, যাতে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় থাকে।
কম চিনি গ্রহণ : ঠান্ডা কফিতে সাধারণত সিরাপ, ক্রিম বা ফ্লেভার মেশানো হয়, যা ক্যালরি ও চিনি বাড়ায়। গরম কফি অনেকেই কালো বা সামান্য দুধ দিয়ে পান করেন—ফলে চিনি গ্রহণ কম হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ক্যাফেইন কম খাওয়া হয় : গরম কফি ধীরে ধীরে চুমুক দিয়ে পান করতে হয়, তাই একবারে বেশি কফি খাওয়া হয় না। এতে ক্যাফেইনের পরিমাণও স্বাভাবিক থাকে এবং তৃপ্তিও বেশি মেলে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে : গবেষণায় দেখা গেছে, গরম কফিতে ঠান্ডা কফির তুলনায় সামান্য বেশি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি শরীরকে ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং ত্বক ও কোষের বার্ধক্য রোধে সাহায্য করে।
শীতের সকালে এক কাপ গরম কফি মন ও শরীরকে জাগিয়ে তোলে, তবে পরিমাণে সংযমী থাকা দরকার। অতিরিক্ত চিনি বা ক্রিম এড়িয়ে চলুন, আর পর্যাপ্ত পানি পান করুন—তাহলেই কফি আপনার জন্য হবে উপকারী সঙ্গী।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
মন্তব্য করুন