আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে রোববার মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি মোহামাদ হাসানের সঙ্গে টেলফান আলাপ করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে আরও এক মুসলিম দেশের সঙ্গে ইসলামাবাদের কুটনৈতিক আলাপকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলোচনায় ইসহাক দার সাম্প্রতিক আঞ্চলিক ঘটনাবলি, বিশেষ করে ভারতের বিভিন্ন উসকানিমূলক পদক্ষেপ ও কূটনৈতিক আচরণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দুনিয়ানিউজ জানিয়েছে, উপপ্রধানমন্ত্রী ভারতের ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’, ‘উসকানিমূলক প্রচা’, এবং একতরফাভাবে ঐতিহাসিক ইন্দাস পানিচুক্তি (Indus Waters Treaty) স্থগিত করার সিদ্ধান্তকে সরাসরি আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তির লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেন।
ডার বলেন, পাকিস্তান সব সময় আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার পক্ষপাতী। কিন্তু ভারতের এই একতরফা আচরণ শুধু দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতাকেও হুমকির মুখে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় স্বার্থ, পানি নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাকিস্তান সবধরনের সাংবিধানিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে।
এই আলোচনায় মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামাদ হাসান পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন জানান এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা হ্রাসে সকল পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যেকোনো উত্তেজনা দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে সমাধান করা উচিত।
দুই দেশের মন্ত্রীরা পারস্পরিক কূটনৈতিক যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করা এবং চলমান পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার ওপর গুরুত্ব দেন। তারা ভবিষ্যতেও নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে পারস্পরিক বোঝাপড়া বজায় রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এই ধরনের কূটনৈতিক সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এমন সময়ে যখন কাশ্মিরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলা, ইন্দাস চুক্তি স্থগিতকরণ এবং পারমাণবিক হুঁশিয়ারি পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলেছে।
এই প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়ার মতো আঞ্চলিক প্রভাবশালী মুসলিম রাষ্ট্রের সমর্থন পাকিস্তানের কূটনৈতিক অবস্থানকে কিছুটা শক্তিশালী করবে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন