কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ মে ২০২৫, ১১:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যুদ্ধ করল ভারত-পাকিস্তান, পোয়াবারো চীনের

চীনা প্রযুক্তির জে-টেন-সি যুদ্ধবিমান। ছবি : সংগৃহীত
চীনা প্রযুক্তির জে-টেন-সি যুদ্ধবিমান। ছবি : সংগৃহীত

দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের হঠাৎ সংঘাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার আকাশ। ৭ মে দিবাগত রাতে স্থানীয় সময় রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিটের মধ্যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায় ভারতের বিমানবাহিনী।

পাল্টা জবাবে পাকিস্তান আকাশে তোলে তাদের সর্বাধুনিক চীনা প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, শুরু হয় এক সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র আকাশযুদ্ধ। তবে এই সামরিক উত্তেজনার মধ্যেও সবচেয়ে বেশি লাভবান হলো যে দেশটি, সেটি হলো- চীন।

পাকিস্তান দাবি করেছে, এই সংঘাতে তারা প্রথমবারের মতো যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে চীনের তৈরি জে-টেন-সি ‘ভিগারাস ড্রাগন’ যুদ্ধবিমান এবং এর মাধ্যমে গুলি করে ভূপাতিত করেছে ভারতের দুটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল জেট। যদিও ভারত এই দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে অস্বীকার করেছে, তবে মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে জানা গেছে- পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান দুটি ভারতীয় জেট ধ্বংসে সফল হয়েছে।

এটি ছিল চীনা চেংদু এয়ারক্রাফট করপোরেশনের তৈরি জে-টেন-সি যুদ্ধবিমানের প্রথম যুদ্ধ-অভিজ্ঞতা। আর এই অভিষেক যুদ্ধেই চীন কুড়িয়ে নেয় অভাবনীয় অর্থনৈতিক লাভ। যুদ্ধ শুরুর মাত্র তিন দিনের মাথায় চেংদু করপোরেশনের শেয়ারের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়।

৬ মে যার মূল্য ছিল ৫৯.২৩ ইউয়ান, তা ৯ মে-তে গিয়ে দাঁড়ায় ৮৮.৮৮ ইউয়ানে। অন্যদিকে, ভারতের ব্যবহৃত রাফাল জেটের নির্মাতা ফরাসি প্রতিষ্ঠান ডেসল্ট এভিয়েশন-এর শেয়ারে ধস নামে ; কমে যায় ৫ শতাংশেরও বেশি।

সোমবার (১২ মে) প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট পোর্টাল বুলগারিয়ান মিলিটারির প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

বিশ্লেষকদের মতে, এটাই প্রমাণ করে যে আসল যুদ্ধক্ষেত্রেই পরীক্ষিত অস্ত্র সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। জে-টেন-সি এর সফল ব্যবহার চীনকে বিশ্ব অস্ত্রবাজারে নতুন আস্থার জায়গায় নিয়ে গেছে। পাকিস্তান ছাড়াও ইতোমধ্যেই মিশর, আলজেরিয়া ও সৌদি আরবের সঙ্গে চীন আলোচনা চালাচ্ছে এই যুদ্ধবিমান বিক্রির বিষয়ে।

জে-টেন-সি যুদ্ধবিমানটি চীনের ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল ফাইটার। এতে রয়েছে এএসএ রাডার, পিএল-১৫ দূরপাল্লার মিসাইল এবং অত্যাধুনিক ডাব্লিউএস-১০বি ইঞ্জিন- যা একে আধুনিক যুদ্ধে কার্যকর একটি অস্ত্রে পরিণত করেছে।

চীন ও পাকিস্তানের সামরিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চীনের অস্ত্র রপ্তানির ৬০ শতাংশই গেছে পাকিস্তানে। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে, পাকিস্তান এখন কার্যত চীনের সামরিক পরীক্ষাগার। সেই পরীক্ষার বাস্তব ফল এখন চীন ঘরে তুলছে অর্থনৈতিক, সামরিক ও কূটনৈতিকভাবে।

চীন এই পুরো পরিস্থিতিকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছে তাদের ‘ডিফেন্স ইকোনমি’ কৌশল বাস্তবায়নে। যুদ্ধ না করেই তাদের অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয়েছে, আর প্রযুক্তিগত সক্ষমতার প্রমাণ মিলেছে বাস্তব যুদ্ধে।

অন্যদিকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ করে পেয়েছে শুধু ক্ষয়ক্ষতি- প্রাণহানি, ব্যয়বৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা। এই পরিণতি নতুন করে প্রশ্ন তুলছে-আধুনিক যুগে যুদ্ধ কি কেবল সংঘর্ষ, নাকি তা হয়ে উঠেছে বড় শক্তিগুলোর লাভের মঞ্চ?

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বিপিএল নিয়ে অবশেষে বড় ঘোষণা

কমলো সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার, আজ থেকে কার্যকর

৫ দিনেও হয়নি সেই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা

যুদ্ধবিরতির পর নিহতের নতুন সংখ্যা জানাল ইরান

সিটিকে বিদায় করে ক্লাব বিশ্বকাপে আল হিলালের বড় অঘটন

ডেঙ্গু জ্বর: কিছু তথ্য

এইচএসসিতে প্রশ্নপত্র নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সতর্কতা

জুলাই অভ‍্যুত্থান : মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা

৪৪তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারে প্রথম ফরহাদ

‘দুঃখিত, এবার আর তা হবে না’

১০

‘কূটনীতির দরজা কখনো পুরোপুরি বন্ধ হয় না’

১১

তেলের দামে বড় পতনের আভাস

১২

এসএসসি পাসেই ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে চাকরি

১৩

৩২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, বাবা-ছেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

১৪

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি / রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রসমাবেশ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা

১৫

ইরানের কমান্ডার কানি গুপ্তচর কি না, জানাল মোসাদ

১৬

যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি

১৭

চাল না কিনলে জাপানে নতুন করে শুল্কের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

১৮

হলি আর্টিসান হামলার আজ ৯ বছর

১৯

সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফরের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী আজ

২০
X