কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘মনস্টার মিসাইল’ ভয় ধরিয়েছে কিম জং উনের বুকে

ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

ধোঁয়ায় ঢাকা আকাশে গর্জে উঠবে দানবীয় বিস্ফোরণ—এমন এক দৃশ্যের কথা ভাবলেই শীতল হয়ে যায় শরীর। এবার শত্রুর ঘুম হামরাম করা এক ভয়ংকর অস্ত্র প্রস্তুত করছে দক্ষিণ কোরিয়া। এটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘হিউনমু-৫’, কিন্তু লোকজন এটিকে এখন ডাকতে শুরু করেছে ‘মনস্টার মিসাইল’ নামে। বছরের শেষে ইতোমধ্যেই এই বিশালাকার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা চলছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রের খবর প্রকাশের পর থেকেই কোরীয় উপদ্বীপের দুই প্রান্তে নতুন করে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

এই দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্য যে কারোর ভয় জাগানোর জন্য যথেষ্ট। ওজন প্রায় ৩৬ টন, আর এতে বহন করা যায় ৮ টন ওজনের ওয়ারহেড—যা মাটির অনেক নিচে থাকা বাঙ্কারও গুঁড়িয়ে দিতে পারে। সামরিক সূত্র বলছে, এটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য তবে চাইলে মোবাইল লঞ্চার থেকেও ছোঁড়া যায়। সবচেয়ে বিস্ময়কর দিক হলো এর পাল্লা—লোডের ওপর নির্ভর করে ৬০০ কিলোমিটার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ছুটে যেতে পারে এই দানব। মানে, উত্তর কোরিয়ার যে কোনো গোপন বাঙ্কার, এমনকি চীনের কিছু অঞ্চলও এর আওতার বাইরে নয়।

এই প্রকল্পের ধারণা আসে ২০১০ সালের দিকে, যখন উত্তর কোরিয়ার আক্রমণে দক্ষিণের ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। তখন থেকেই সিউল বুঝেছিল, যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক ছাতার ওপর নির্ভর করে থাকা তাদের জন্য যথেষ্ট নয়। সিউলের আসান ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ, ড. ইয়াং উক বলছেন—আমাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই, তাই সবচেয়ে শক্তিশালী প্রচলিত অস্ত্রই এখন আমাদের হাতে থাকা একমাত্র বিকল্প।

যদিও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে বহু বছর দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রকল্পটি আটকে ছিল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর সেই সীমা তুলে দেওয়ার পর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। অবশেষে, দীর্ঘ প্রস্তুতির পর দক্ষিণ কোরিয়া এখন এক এমন অস্ত্র হাতে পেতে চলেছে, যা উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্যকে চাইলেই পুরোপুরি বদলে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এটি কি সত্যিই যুদ্ধ ঠেকাবে, না কি উল্টো আগুনে ঘি ঢালবে? বিশ্লেষকরা বলছেন, পিয়ংইয়ং হয়তো এটিকে তুচ্ছ বলবে, কিন্তু তাদের অন্তরে এটি নিয় ভয়টা ঠিকই থেকে যাবে। কারণ, এই ক্ষেপণাস্ত্রের লক্ষ্য পারমাণবিক কেন্দ্র নয়, বরং নেতৃত্বের আশ্রয়স্থল—অর্থাৎ, কিম জং উনের সম্ভাব্য লুকানোর জায়গাগুলো।

এই বাস্তবতায় কোরীয় উপদ্বীপ যেন আবারও ফিরে যাচ্ছে ঠান্ডা যুদ্ধের ছায়ায়। দুই দেশের আকাশে শত্রুভাবাপন্ন দৃষ্টির বিনিময় চলছেই, আর সবাই চুপচাপ প্রশ্ন করছে—এই দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের শব্দ কি শান্তির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেবে? নাকি দুই দেশকে নিবৃত করবে অনাগত দিনে সকল হিংসা বিদ্বেষ থেকে, আর উৎসাহ দেবে সব ভুলে গিয়ে শান্তির পথে হাটতে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বদলে গেল ‘বাগছাস’র নাম

ভূমি অফিসে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ

ভক্তদের সুখবর দিলেন মেসি

চিতাবাঘ ভেবে বেঁধে রাখা হলো মেছোবাঘ

৫০০ বছরের শত্রুতা ছেড়ে একসঙ্গে প্রার্থনায় রাজা চার্লস ও পোপ লিও

ভারতের সঙ্গে যেমন সম্পর্ক চান জামায়াত আমির

হোয়াটসঅ্যাপে নাটোরের জেলারকে সাবেক এমপি শিমুলের হুমকির অভিযোগ

আসছে টানা ৩ দিনের ছুটি

‘যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধের শামিল’

পার্টিকেল বোর্ডের ব্যবসায় আরএফএল

১০

মাটিরাঙ্গা সীমান্তে ৯ মাসে ১৯ কোটি টাকার মালামাল জব্দ

১১

সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষে লড়বেন না আইনজীবী সারোয়ার, জানালেন কারণ

১২

বিএনপির সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের প্রতিনিধি দলের বৈঠক

১৩

সরকার ও উপদেষ্টারা অশান্তিতে নোবেল প্রাপ্য : জিএম কাদের

১৪

‘ভোটকেন্দ্রে থাকবে বডি ক্যামেরা ও সিসিটিভি, উড়বে ড্রোন’

১৫

সিলেটে যেসব এলাকায় শুক্রবার ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না 

১৬

নিয়মিত ওয়ানডে খেললে দল আরও শক্তিশালী হবে: মেহেদী হাসান মিরাজ

১৭

পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৬ কর্মকর্তাকে রদবদল

১৮

নির্বাচনে প্রার্থীর যে তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক

১৯

সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হলেন যিনি

২০
X