

তাইওয়ান নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির মন্তব্যকে ‘চমকপ্রদ ও গুরুতর ভুল বার্তা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। রোববার (২৩ নভেম্বর) চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, জাপান এমন এক ‘লাল রেখা অতিক্রম করেছে, যা স্পর্শ করা যায় না’।
ওয়াং ই-এর অভিযোগ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাইওয়ান ইস্যুতে সামরিক হস্তক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ৭ নভেম্বর জাপানি সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে তাকাইচি বলেন, চীনের সম্ভাব্য আক্রমণের পরিস্থিতিতে টোকিও সামরিক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে—যা চীন কঠোরভাবে বিরোধিতা করছে।
এই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা দুই সপ্তাহের বেশি ধরে চলছে এবং এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে বড় চীন-জাপান সংকটে পরিণত হয়েছে। বিষয়টি বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলেছে। এমনকি বেইজিং শুক্রবার জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছেও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড বলে দাবি করে এবং প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগের কথা অস্বীকার করেনি। অন্যদিকে তাইওয়ান বলছে—তাদের ভবিষ্যৎ শুধু দ্বীপের জনগণের সিদ্ধান্তেই নির্ধারিত হবে, বেইজিংয়ের নয়।
জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার ওয়াং ই-এর মন্তব্যে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে শনিবার টোকিও জানায়, চীনের অভিযোগ ‘সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য’। জাপান শান্তিপূর্ণ নীতি বজায় রাখবে।
তাইওয়ানও চীনের জাতিসংঘপত্রের নিন্দা জানিয়েছে। দেশটি বলছে, এতে ‘অসভ্য, অসঙ্গত ও ইতিহাস বিকৃতকারী মন্তব্য’ রয়েছে। এটি জাতিসংঘ সনদের ২(৪) ধারার লঙ্ঘন, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে শক্তি প্রদর্শন বা হুমকি নিষিদ্ধ।
ওয়াং ই বলেন, জাপানের এই অবস্থানের জবাবে চীন ‘দৃঢ়ভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে বাধ্য’। সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও যুদ্ধ-পরবর্তী অর্জিত স্থিতিশীলতা রক্ষার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি সতর্ক করেন, জাপান যদি ‘এই ভুল পথে’ এগোয়, তবে বিশ্বের দেশগুলো জাপানের ঐতিহাসিক যুদ্ধাপরাধ পুনর্মূল্যায়ন করার অধিকার রাখে এবং জাপানি সামরিকতাবাদের পুনরুত্থান প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে পারে।
মন্তব্য করুন