রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৩৩ পিএম
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বাবার ঋণের দায়ে ছেলেকে অপহরণ, স্বপ্নভঙ্গ পরীক্ষার্থীর

ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স
ছবি : কালবেলা গ্রাফিক্স

রাজশাহীর চারঘাটে বাবার ঋণের জেরে পরীক্ষার আগের দিন সন্ধ্যায় তুলে নেওয়া হলো নাহিদ নামের এক শিক্ষার্থীকে। রোববার (২৩ নভেম্বর) কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নবম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু পরীক্ষার সকালে তাকে পরীক্ষার হলে পাওয়া যায়নি। ফলে থেমে গেল আবারও তার পাঠ পথ।

এর আগে শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তাকে তুলে নেওয়া হয়। নাহিদ চারঘাট উপজেলার মুংলী গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে। সেলিম হোসেন দীর্ঘদিন ধরে ঋণের দায়ে আত্মগোপনে আছেন।

জানা গেছে, বাবার নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কারণে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি ছেলে। পরে তাকে ভর্তি করা হয় একটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল রাজশাহী নগরের লোকনাথ উচ্চবিদ্যালয়ে। পরীক্ষার জন্য সে অবস্থান করছিল শহরের খালার বাড়িতে। ৬ নভেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরু। রোববার ছিল গুরুত্বপূর্ণ ট্রেড পরীক্ষা। কিন্তু তার আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহীর ভুবনমোহন পার্ক এলাকা থেকে তাকে আটক করে নিয়ে যান চারঘাটের ফরিদপুর এলাকার সোহান নামের এক ব্যক্তি। পরিবারের সদস্যরা বোয়ালিয়া ও চারঘাট থানায় জিডি করতে গেলেও পুলিশ অভিযোগ নেয়নি বলে জানান তারা।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সোহান স্বীকার করেন, তিনিই ছেলেটিকে নিজের জিম্মায় রেখেছিলেন। দাবি করেন, সেলিম হোসেন তার কাছ থেকে নিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। সেলিমের কাছে এলাকার আরও অনেকে পাওনাদার বলে জানান তিনি।

পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে সোহান কালবেলাকে বলেন, এটা একার সিদ্ধান্ত না। সেলিম অনেকের কাছেই টাকা নিয়েছেন। পরে সন্ধ্যায় সোহানকে আবারও কল করা হলে তিনি জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশের লোকজন এসে ওই ছেলেকে নিয়ে গেছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে ওই ছেলে রয়েছে।

এর আগে দুপুরে স্থানীয় সাংবাদিকরা সোহানের বাড়িতে গেলে তার ভাই পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, ছেলেটি তাদের বাড়িতে নেই- পাওনাদারদের মধ্যে কারও বাড়িতে রাখা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে কথা বলেই তারা বিষয়টি সামলাচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

সেলিম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সেলিম স্টোর নামের ইলেকট্রনিকসের দোকানটি তালাবদ্ধ। সচ্ছল পরিবার হলেও ধারদেনার চাপে গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি সপরিবারে বাড়ি ছেড়েছেন। কোথায় আছেন কেউ জানে না। সেই দায় আজ এসে পড়েছে তার ছেলে আর বৃদ্ধা মায়ের ওপর। বাড়িতে পাওয়া যায় সেলিমের মা হোসনে আরা বেগমকে। উঠানে নাতির পোষা পাখিকে খাবার দিচ্ছিলেন তিনি। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

চারঘাট থানার এসআই কাওছার আহম্মেদ বলেন, নাহিদের দাদি সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ চারঘাটের একটি বাসা থেকে কিশোরকে উদ্ধার করে। পরে তাকে ওই ছেলের দাদির জিম্মায় দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঘাস খাওয়ায় গরুর পায়ের রগ কাটল প্রতিবেশী

রেস করতে গিয়ে প্রাণ গেল ২ তরুণের

কবিতা-গানের মনোমুগ্ধময় সন্ধ্যা― ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’

রেফারি বিতর্ক নিয়ে বার্সাকে ফের আক্রমণ রিয়াল সভাপতির

লেবাননে আবারও ইসরায়েলি হামলা

সাতক্ষীরা-৩ / আশ্বাস পেয়ে গণসংযোগে ব্যস্ত ডা. শহিদুল আলম

বিএনপির সাথে বৈঠক / খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

বরিশালের ৬টি আসনে এনসিপির মনোনয়ন চান ১১ জন, তিনটিতে একক প্রার্থী

কতজন প্রবাসী পোস্টাল ব্যালটের নিবন্ধন করেছেন জানাল ইসি

জামায়াত নেতার বিতর্কিত বক্তব্যের নিন্দা এনসিপির

১০

ভূমিকম্পের সময় কী করা উচিত, জানাল ফায়ার সার্ভিস

১১

নর্দান ইউনিভার্সিটির নতুন ভিসি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান

১২

বিএনপি বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা চালু করবে : আমীর খসরু

১৩

এমপি হলে সৎপথে ব্যবসার লাইন দেখিয়ে দেব : আজহারুল ইসলাম মান্নান

১৪

হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া

১৫

কমনওয়েলথ মহাসচিবের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের সাক্ষাৎ

১৬

ইসলামবিরোধী আইন মেনে নেওয়া হবে না : মাওলানা রাব্বানী

১৭

বাবার ঋণের দায়ে ছেলেকে অপহরণ, স্বপ্নভঙ্গ পরীক্ষার্থীর

১৮

ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমিরে জামায়াতের বৈঠক

১৯

ফাইনালে টস জিতে বোলিংয়ে বাংলাদেশ

২০
X