রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারপ্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন কি আবারও ‘জীবিত’ হয়ে ফিরে আসবেন? যদিও রাশিয়ার মস্কোয় বিমান দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে তার মৃত্যুর বিষয়টি রুশ কর্তৃপক্ষ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।
এর আগেও বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়েছিল। এবার দুর্ঘটনাস্থল রাশিয়া হলেও তখন আফ্রিকার দেশ কঙ্গো ছিল নাট্যমঞ্চ।
২০১৯ সালে কঙ্গোয় একটি সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রিগোজিনের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হয়। তবে ঘটনার তিন দিন পর ঠিকই ‘মৃত’ প্রিগোজিন সুস্থ ও জীবিত হয়ে ফিরে এসেছিলেন।
এবারও ইতিহাস ওই দিকেই যাবে কিনা- এমন প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। এ প্রশ্ন করার অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে।
প্রিগোজিনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, এটা সত্য দুর্ঘটনাকবলিত বিমানটি ওয়াগনারপ্রধানের। তবে তিনি সাধারণত অন্য বিমানে যাতায়াত করে থাকেন।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের কেয়ার গাইলস বলেন, বিধ্বস্ত বিমানের যাত্রী তালিকায় প্রিগোজিনের নাম রয়েছে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে ওয়াগনারপ্রধানের যাতায়াতের তথ্য গোপন রাখতে অনেকেই নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রেখেছেন।
এ ছাড়া এমন তথ্যও রয়েছে, প্রিগোজিনের বিমানটি যে এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে ঠিক একই সময়ে ওই এলাকায় ওয়াগনার সংশ্লিষ্ট আরেকটি বিমান ফ্লাইট রাডারে শনাক্ত হয়েছে। প্রথম বিমানটি বিধ্বস্ত হলে সেটি নিরাপদে মস্কোয় ফিরে আসে।
গত জুনে রাশিয়ার সামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে ওয়াগানরের বিদ্রোহের পর বেশ কয়েক দিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন প্রিগোজিন। তখনো গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে খবর দেওয়া হয়েছিল। যদিও এর কয়েক দিন পরই তিনি ফিরে আসেন। এমনকি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও দেখা করেন।
গত বুধবারের বিমান দুর্ঘটনায় ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানালেও এখনো তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি রুশ কর্তারা। তারা বলছে, বিমান দুর্ঘটনায় ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের ফ্লাইট রেকর্ডারও উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে এ ঘটনায় আণবিক-জেনেটিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
গতকাল শুক্রবার (২৫ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিধ্বস্ত বিমানে প্রিগোজিন ছিলেন, এখনো এমন নিশ্চিত প্রমাণ নেই। তবে খুব সম্ভবত তিনি বিমানে ছিলেন এবং নিহত হয়েছেন।
গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, প্রিগোজিন বিমানে ‘সম্ভবত’ ছিলেন।
এদিকে প্রিগোজিনের বিমানটি কীভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটি নিয়েও ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। বিমানে মদের বাকসে বোমা রাখা ছিল? ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে বিমানটি ভূপাতিত করা হয়েছে? তার মৃত্যু নিয়ে একের পর এক রহস্য দানা বাঁধছে। যদিও মার্কিন গোয়েন্দাদের প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিস্ফোরণের মাধ্যমে বিমানটি বিধ্বস্ত করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন