কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম বিদেশের মাটিতে জার্মান সেনা

জার্মান সেনাবাহিনী। ছবি : সংগৃহীত
জার্মান সেনাবাহিনী। ছবি : সংগৃহীত

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রায় আট দশক পর প্রথমবারের মতো স্থায়ীভাবে বিদেশের মাটিতে সেনা মোতায়েন করল জার্মানি।

চলতি সপ্তাহে দেশটির একটি সশস্ত্র ব্রিগেড লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে পৌঁছেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মার্জ। খবর এনবিসি নিউজ।

ভিলনিয়াসে আয়োজিত এক সামরিক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিগেড মোতায়েনের ঘোষণা দেন মার্জ। এ সময় তিনি বলেন, আমাদের বাল্টিক মিত্রদের নিরাপত্তা মানেই আমাদের নিরাপত্তা।

বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপজুড়ে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে জার্মানির এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক ও তাৎপর্যপূর্ণ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলমান। ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই মস্কোর ভূখণ্ডবিস্তারের উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন ইউরোপীয় নেতারা।

চ্যান্সেলর মার্জ মন্তব্য করেছেন, রাশিয়া কেবল ইউক্রেন নয়, বরং পুরো ইউরোপকেই নতুনভাবে গঠনের চেষ্টা করছে।

লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেডাও সতর্ক করে বলেন, রাশিয়া ও বেলারুশ ইতোমধ্যে আমাদের সীমান্তে সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এটা নিছক কৌশল নয়, এটি একটি বার্তা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মান সংবিধান সেনাবাহিনীকে মূলত প্রতিরক্ষামূলক সীমায় রাখার পক্ষে ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা-বিশেষত রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে-জার্মানির সামরিক নীতি বড় রকমের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

নতুন মোতায়েনকৃত জার্মান ব্রিগেডটি লিথুয়ানিয়ার রুডনিনকাই শহরে অবস্থান করবে। এটি ২০২৭ সালের মধ্যে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করবে। ব্রিগেডে থাকছে প্রায় ৪,৮০০ সেনা, কয়েকশ বেসামরিক কর্মী, প্রায় ২,০০০ সামরিক যান এবং সাঁজোয়া ইউনিট।

চ্যান্সেলর মার্জ স্পষ্টভাবে বলেন, যদি কেউ ন্যাটোর কোনো সদস্যকে হুমকির মধ্যে ফেলে, তাহলে তারা জেনে রাখুক-সম্পূর্ণ জোট একত্রে তার জবাব দেবে।

এদিকে শনিবার এক সাক্ষাৎকারে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্তোরিয়ুস জানিয়েছেন, যদি সেনাবাহিনীতে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক পাওয়া না যায়, তাহলে ২০২৬ সাল থেকে বাধ্যতামূলক সামরিক নিয়োগ পুনর্বহালের কথা বিবেচনা করছে সরকার।

জার্মানি ২০১১ সালে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগ বাতিল করে। তবে বর্তমান জোট সরকার সামরিক শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেই নীতিতে পরিবর্তন আনতে আগ্রহী। যদিও পিস্তোরিয়ুসের দল, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট পার্টি, ঐতিহাসিকভাবে স্বেচ্ছাসেবকভিত্তিক পন্থাকেই সমর্থন দিয়ে এসেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউরোপের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা কমার সম্ভাবনার মধ্যেই জার্মানির এই পদক্ষেপ এসেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিজেদের নিরাপত্তার ভার নিজেরাই নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

এ প্রেক্ষাপটে, ন্যাটোর সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে বিবেচিত বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো-লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও এস্তোনিয়াকে-রাশিয়া ও বেলারুশের মধ্যবর্তী সংকীর্ণ করিডোর ‘সুওয়াকি গ্যাপ’-এর মাধ্যমে মূল জোট ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত রাখা এখন জার্মানি ও ন্যাটোর অগ্রাধিকার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২৮ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

দুপুরের মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে বজ্রবৃষ্টি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প কর্মসূচি দিয়ে জবি ছাত্রীসংস্থার আত্মপ্রকাশ

২৮ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

২০৭ কোটি টাকার ঋণ খেলাপী / আসিফ এপারেলসের এমডিসহ ২ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

শহীদ আলভীর অসুস্থ পিতার পাশে আমিনুল হক

বুজতেছি না এ সরকার কি আমাদের, নাকি কাদের: ইব্রাহীম

কবি নজরুল ছিলেন মুসলিম জাগরণের অগ্রদূত : ডা. ইরান

শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু মঞ্চ ও পোশাক কর্মশালা

১০

এবার চতুর্থ সারির ক্লাবের কাছে হেরে ম্যানইউর বিদায়

১১

ড. মাসুদের প্রচেষ্টায় দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেলো ৩ ইউনিয়নের মানুষ

১২

বিশ্বকাপ দলে সুযোগ না পেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাচ্ছেন বাংলাদেশ স্পিনার

১৩

রুমিন ফারহানার দুঃখ প্রকাশ

১৪

বৃহস্পতিবার প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা

১৫

ভারতে নিষিদ্ধ অনলাইন জুয়া, বড় ধাক্কায় আইপিএল ও ভারতীয় ক্রিকেট

১৬

পদক্ষেপ নিলে মনে হয় দেশেই থাকা হবে না : ডিসি মাসুদ

১৭

রাজনৈতিক দলের মতামত নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সভা

১৮

ডিআরইউতে মঞ্চ ৭১–এর কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি

১৯

জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব অপরিহার্য: উপদেষ্টা

২০
X