ইউক্রেনকে বিপদে ফেলে জার্মানির পর এবার যুক্তরাষ্ট্রও সরে যাচ্ছে। মূলত ‘যুদ্ধের ক্লান্তি’ এবং অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে কিয়েভকে সমর্থন করা ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি জেলেনস্কিকে যুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। জার্মানির ট্যাবলয়েড ‘বিআইএলডি’ এর বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে দ্য টেলিগ্রাফ।
গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে রুজভেল্ট কক্ষে বৈঠকে বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ। এ সময় বাইডেন ও ওলাফ উভয়েই ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ সীমিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। পাশাপাশি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসার জন্যও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ওপর পরোক্ষভাবে চাপ দিতে সম্মত হয়েছেন।
‘বিআইএলডি’ আরও জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির মতো মহাশক্তিধর রাষ্ট্র এখন ইউক্রেনকে ‘নির্দিষ্ট পরিমাণ’ অস্ত্র সরবরাহ করার পক্ষে। যাতে তারা কোনো রকম রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারে। পাশাপাশি রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ থাকে সেই অবকাশ রাখতেও ইউক্রেন সেনাবাহিনীর হাতে বেশি অস্ত্র তুলে দিতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি।
এমন পরিস্থিতিতে এখন ইউক্রেনকে ‘আলোচনার জন্য কৌশলগতভাবে ভালো অবস্থানে’ রাখার লক্ষ্যে কাজ করছে জার্মানি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জার্মান সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছেন, জেলেনস্কির বোঝা উচিত, এভাবে সবকিছু চলতে পারে না।
বার্লিন ও ওয়াশিংটন মনে করছে, কিয়েভ এবং মস্কো যদি আলোচনায় বসতে রাজি না হয়, তা হলে দুই দেশের মধ্যে সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। দুই সরকারের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তিও হবে না।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়া যদি ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি না হয়, তাহলে ‘প্ল্যান বি’-ও রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির হাতে। অর্থাৎ শান্তি আলোচনা সম্ভব না হলে বিকল্প হিসেবে কোনো চুক্তি ছাড়াই সংঘাত থামাতে চাইছে মিত্র দেশ দুটি।
এদিকে ইউক্রেনকে নতুন করে আরও ১০ লাখ শেল দেওয়ার কথা ছিল ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের। তবে কথা রাখেনি ইইউ। তারা ইউক্রেনকে মাত্র তিন লাখ শেল দিয়েছে। ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুবেলা এ তথ্য জানিয়েছেন। হঠাৎ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ পিছুটান নেওয়ায় চরম বেকায়দায় পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
মন্তব্য করুন