দুই বছর পেরিয়ে তৃতীয় বছরে পদার্পণ করেছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। চলতি বছরের শুরুতে এ হামলা আবার জোরদার করেছে উভয়পক্ষ। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এতে প্রায় ১১ হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। শনিবার (০৯ মার্চ) টিআরটি ওয়াল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসগরীয় অঞ্চলবিষয়ক সহকারী প্রধান মোহাম্মদ খালেদ খায়ের জানান, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৭০৩ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৯৪ শিশুও রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বেসমারিক লোক ও অবকাঠামোর ওপর যে কোনো হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক আইনানুসারে এ ধরনের হামলা নিষিদ্ধ। ইউক্রেন ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে বেসামরিক লোকদের ওপর হামলা হচ্ছে তা একদমই গ্রহণযোগ্য নয়। এগুলো অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত।
জাতিসংঘের আঞ্চলিক সহকারী প্রধান বলেন, রাশিয়ার দখলকৃত দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক এবং জাপোরিজিয়ায় অন্তত ১৫ লাখ মানুষের ত্রাণের প্রয়োজন। তবে রুশদের বাধার কারণে এসব এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। শুক্রবারের এ বৈঠকে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা লিসা ডোটেন উপস্থিত ছিলেন।
২০২৫ সালে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে স্বাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শতানুসারে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে ইউক্রেন স্বীকৃতি না দেওয়া, ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে ইউক্রেনের তদবিরসহ নানা বিষয়ে কয়েক বছরের টানপড়েন চলতে থাকে। এরপর ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
২০২৪ সালে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যেকার এ যুদ্ধ দুই বছর পার করে তৃতীয় বছরে পা রাখে। এ সময়ে ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিজিয়া দখল করে নেয় রুশ বাহিনী। এ অঞ্চলগুলোর আয়তন ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বেশ কয়েকবার এ যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে রুশ বাহিনীর দাবি, দখলকৃত দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিজিয়াকে স্বীকৃতি দিতে হবে। এ শর্ত মানলে তারা অভিযান বন্ধও করবে।
অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি গত বছর এক ডিক্রির মাধ্যমে ঘোষণা দেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যতদিন ক্ষমতাসীন থাকবেন ততদিন তারা রুশ প্রশাসনের কারোর সঙ্গে আলোচনায় যাবেন না।
মন্তব্য করুন