কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ১০:২৪ এএম
অনলাইন সংস্করণ

৯২ বছর বয়সে ভর্তি হলেন স্কুলে

শ্রেণিকক্ষে সালিমা। ছবি : সংগৃহীত
শ্রেণিকক্ষে সালিমা। ছবি : সংগৃহীত

বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন। ঠিকমতো চোখে দেখেন না। কানেও খুব একটা শোনেন না। কিন্তু আজীবনের লালিত স্বপ্ন পূরণে ফিরে এসেছেন পড়ার টেবিলে। ছোট ছোট কোমলমতি শিশুর সঙ্গে উচ্চস্বরে শিখছেন বর্ণমালা।

বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্লাসের মধ্যমণি হয়ে উঠেছেন এই বৃদ্ধা। নতুন সহপাঠী পেয়ে শিশুদের আগ্রহের কমতি নেই। উদ্যোগী হয়ে তারাই লেখাপড়া শেখাচ্ছে তাদের দাদুকে।

জীবনের শেষবেলায় পৌঁছে গেছেন সালিমা খান। এ বয়সে নাতি-নাতনির সঙ্গে খুনসুটি করে কাটাবার কথা। অথচ ৯২ বছর বয়সী এই নারী রোজ নিয়ম করে স্কুলে যাচ্ছেন। একা হেঁটে যেতে পারেন না সালিমা। তাকে হাতে ধরে নিয়ে যেতে হয়। তবুও দমে যাচ্ছেন না তিনি। পড়াশোনা আর জানার তীব্র আকাঙ্ক্ষাই তাকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রসদ জোগাচ্ছে।

সালিমা ২০২৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ভারতের উত্তরপ্রদেশের বুলান্দশহরের এই বাসিন্দা এরপর থেকেই নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছেন। স্কুলে ক্লাস করতে পেরে সালিমার আনন্দের যেন অন্ত নেই। তার ভাষায়, আমি শিখতে চাইতাম। আমার পরিবারকে এ জন্য বার বার বলেছি। তখন আমার ভাই আমাকে স্কুলে ভর্তি হতে বলেন, যেন সেখানে গিয়ে শিখতে পারি। তার কথা শুনে আমি স্কুলে ভর্তি হই।

চোখের সামনে নানি-দাদির বয়সী সহপাঠী পেয়ে খুশি কোমলমতি শিশুরা। তাই তারাও সালিমাকে হাতে ধরে শেখাচ্ছে লেখাপড়া। সালিমা বলছিলেন, যখন আমি স্কুলে বসি তখন এই বাচ্চারা আমাকে শেখায়। আবার আমিও তাদের শেখাই। আমি শিশুদের ভালোবাসি। আমি এই স্কুল ভালোবাসি। বৃদ্ধা এই নারীর শিক্ষায় সাহস ও শক্তি জোগাচ্ছেন স্কুলের প্রিন্সিপাল ড. প্রতিভা শর্মা।

প্রতিভা বলছিলেন, সালিমার চোখের সমস্যা রয়েছে। তার চোখে ছানি পড়েছে। আবার ঠিকমতো কানেও শোনেন না। তাকে শেখাতে হলে তাই আমাদের জোরে জোরে কথা বলতে হয়। কিন্তু সালিমার আগ্রহের কমতি নেই। তিনি পড়াশোনা করতে মুখিয়ে থাকেন। অন্য শিশুদের সঙ্গে শেখা বা কবিতা পাঠের মতো তিনিও যেন শিশু হয়ে ওঠেন। তিনিও শিশুদের সঙ্গে হাসেন এবং পড়ালেখা উপভোগ করেন।

নব ভারত লিটারেসি মিশন কর্মসূচির আওতায় স্কুলে ফেরার সৌভাগ্য হয়েছে সালিমার। এই সরকারি শিক্ষা কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকরা সালিমাকে একজন প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষার্থী হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। তার দেখাদেখি গ্রামের অন্য নারীরাও স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ্রহ পেয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে খোদ সালিমার দুই পুত্রবধূ।

সূত্র : ভিয়োরি

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

৫ আগস্টের বিজয়কে ধরে রাখার আহ্বান চট্টগ্রাম ডিসির

ব্লুটুথ হেডফোন নাকি সাধারণ হেডফোন, কোনটি ভালো জানেন?

রাকসু নির্বাচন ঘিরে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ১০ দফা প্রস্তাবনা

‘ছোট সাজ্জাদের’ স্ত্রী তামান্না তিন দিনের রিমান্ডে

ফিক্সিংকাণ্ডে আলোচনায় ঢাকা ক্যাপিটালস, কী বলছে শাকিব খানের দল

জুমার নামাজে না গেলে ২ বছরের দণ্ডের বিধান করল যে দেশ

প্রিমিয়ার ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করল বাংলাদেশ ব্যাংক

সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

রাংপানিতে বিজিবির কড়া নজরদারি, আরও ২০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার

বিএনপির ফরম ক্রয়ের রসিদ জমা দিল খুলনা

১০

বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী দম্পতির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

১১

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২২ রানের জয় বাংলাদেশের

১২

নানা আলোচনায় শেষ হলো এইচএসসি পরীক্ষা, ব্যবহারিক কবে

১৩

অক্টোবরে এশিয়ার দুই দলের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল

১৪

নিখোঁজের একদিন পর মাদার ভ্যাসেলের সুপারভাইজার উদ্ধার

১৫

সাবেক মন্ত্রী শাহাবের জমিসহ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

১৬

মাইলস্টোন ট্রাজেডি  / প্রাণ হারানো শিক্ষকরা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন : প্রধান উপদেষ্টা

১৭

টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর, ময়মনসিংহ থেকে সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ

১৮

গার্ডিয়ান লাইফের সিইওকে লিগ্যাল নোটিশ

১৯

‘মানবতা বাদ দিলে মানুষ মানুষই থাকে না’

২০
X