কলেজের বিভাগীয় প্রধান ছাত্রীকে বারবার অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তাব দিচ্ছিলেন। ছাত্রী রাজি না হওয়ায় ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দেন। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও সুরাহা মিলেনি। শিক্ষকের জোরাজুরি তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলে। শেষমেশ প্রতিবাদী সেই ছাত্রী নিজ শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন। তিন দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরও অবশেষে তার জীবনপ্রদীপ নিভে যায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, সোমবার (১৪ জুলাই) রাতে ২২ বছর বয়সী ওই ছাত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে শনিবার তিনি শরীরে আগুন দেন।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস, ভুবনেশ্বরে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে জানায়, বার্নস আইসিইউতে পর্যাপ্ত পুনরুত্থান এবং রেনাল রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিসহ সম্ভাব্য সব সহায়ক ব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও তাকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়নি। ১৪ জুলাই রাত ১১টা ৪৬ মিনিটে তাকে ক্লিনিক্যালি মৃত ঘোষণা করা হয়।
আগুনে ছাত্রীর শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল এবং তাকে বাঁচাতে গিয়ে এক সহপাঠীও ৭০ শতাংশ পুড়ে আহত হন।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার বালাসোরের ফকির মোহন কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শনিবার শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে এবং উত্তক্তের প্রতিবাদে ওই ছাত্রীসহ আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী কলেজের গেটের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। বিক্ষোভ চলাকালীন ওই ছাত্রী হঠাৎ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের কাছাকাছি গিয়ে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ভিডিওতে সে চিত্র ধরা পড়ে। মুহূর্তে সেটি ভাইরাল হয়।
গত ১ জুলাই কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই ছাত্রী। অভিযোগে তিনি বলেন, বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু তাকে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চাপ প্রয়োগ এবং হুমকি দিয়ে আসছেন। কমিটি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। উল্টো ছাত্রীর ওপর শিক্ষক মানসিক অত্যাচার বাড়ান।
বালাসোরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ বলেন, শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রমাণ সংগ্রহে একাধিক দল কাজ করছে।
মন্তব্য করুন