

ভারতের বিহার রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। এর প্রথম দফায় ১২১টি আসনে রেকর্ড ৬৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। শুধু বিধানসভা নির্বাচনই নয়, ১৯৫২ সাল থেকে শুরু হওয়া লোকসভা ভোটের তুলনাতেও চলতি বছরে বিহারের বিধানসভার প্রথম দফায় সর্বোচ্চ ভোটদান দেখা গিয়েছে। কিন্তু হঠাৎ কেন বিহারের বাসিন্দারা ভোট দিতে এত আগ্রহী?
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, এর পেছনে রয়েছে এসআইআর। এর ফলে সৃষ্ট ভয়, আতঙ্ক, সতর্কতা মানুষকে ভোটকেন্দ্রে টেনে নিয়েছে।
এসআইআর অর্থাৎ স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (বিশেষ নিবিড় সংশোধন)। এসআইআর ভারতের নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকা সংশোধনের একটা প্রক্রিয়া। এর ফলে এবার মৃত্যু হয়েছে, অন্যত্র চলে গিয়েছেন ও অস্তিত্বহীন ভোটার মিলিয়ে প্রায় আট শতাংশ ভোট এর ফলে বাদ গিয়েছে। যেহেতু এটি চলমান প্রক্রিয়া সেহেতু ভবিষ্যতেও ভোটার তালিকা থেকে অসক্রিয়দের বাদ দেওয়া হবে।
জুন মাসে বিহারে সাত কোটি ৮৯ লাখ ভোটার ছিল, কিন্তু এসআইআরের পর ওই সংখ্যা ছয় শতাংশ কমে গিয়ে তা সাত কোটি ৪২ লাখে দাঁড়িয়েছে।
দুই মাস ধরে চলা এসআইআরের প্রক্রিয়া বিহারবাসীকে ভয় ধরিয়েছে। এই সময়ে মানুষ ভয় পেয়েছেন, সতর্কও হয়েছেন, যা হয়তো ভোটারদের বুথে টেনে আনার একটা কারণ হতে পারে। বিহারে গত ৩৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করা সুরুর আহমেদ বলেন, এই কারণে ভোটের হার বৃদ্ধি হয়ে থাকতে পারে।
টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেসের সাবেক অধ্যাপক পুষ্পেন্দ্র কুমার বলেন, এসআইআরে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া ভোটের শতাংশ বৃদ্ধির পেছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ হতে পারে। তবে তিনি ভয়ের বিষয়টিও পুরোপুরি অস্বীকার করেননি।
গত বেশ কয়েক বছর ধরে নির্বাচনের সময় ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছেন সমাজকর্মী রূপেশ। তিনি বলেন, এসআইআরের পর ভোটারদের একাংশের মধ্যে প্রচুর উৎসাহ তৈরি হয়েছে। ভোট দেওয়ার নামে মানুষ তাদের আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি প্রমাণ করতে চাইছে।
অনলাইন সার্ভে এজেন্সি পিপলস পালসের সঙ্গে যুক্ত ডেটা অ্যানালিস্ট ড. রাজন পান্ডে বলেন, আমরা র্যান্ডম এক্সাম্পলসের মাধ্যমে এটাই বলতে পারি যে, মানুষের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে আমরা ভোট না দিলে কল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে আমাদের ভাগটা বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। এই আশঙ্কা শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেই নয়, বেশ পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষের মধ্যেও রয়েছে। কারণ তারাও এসব কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলো থেকে বড় আকারের সুবিধা পান।
মন্তব্য করুন