কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ জুন ২০২৩, ০১:১০ পিএম
আপডেট : ১০ জুন ২০২৩, ০১:২৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা

চাকরি পেতে মৃত মাকে ‘নিখোঁজ’ সাজিয়ে অভিনয়

ভারতের ওড়িশায় দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত ট্রেনের বগি। ছবি : সংগৃহীত
ভারতের ওড়িশায় দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত ট্রেনের বগি। ছবি : সংগৃহীত

ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালেশ্বরে গত ২ জুন ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। চাকরির জন্য সেই ঘটনাকে পুঁজি করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন এক যুবক। ২০১৮ সালে মারা যাওয়া মাকে ট্রেন দুর্ঘটনায় ‘নিখোঁজ’ সাজিয়ে অভিনয় করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত তার চতুরতা ধরে ফেলেছেন ভারতের রেলকর্মকর্তারা।

ভারতের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই যুবক দাবি করেন দুর্ঘটনার সময় তিনি এবং তার মা করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিলেন। দুঘর্টনার সময় তিনি ট্রেনের দরজায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঘটনা ঘটার পর থেকে তিনি তার মাকে আর খুঁজে পাচ্ছেন না। এ নিয়ে তিনি রেলমন্ত্রীর কাছে যান; যে কোনো মূল্যে মায়ের খোঁজ চান।

তিনি দাবি করেন, ওড়িশায় রেল, হাসপাতাল, স্থানীয় প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেও তার মাকে খুঁজে বের করার কোনো সুরাহা হয়নি। কেউ তার কথা শুনতে চাননি। পরে মরিয়া হয়ে রেলমন্ত্রীর দ্বারস্থ তিনি।

এদিকে ওই ছেলের সব কথা শুনে রেল মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তারা জরুরি বার্তা পাঠান দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদরে। এর পরপরই সর্বোচ্চ তৎপরতায় খোঁজ শুরু করেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

ওই ব্যক্তি রেল কর্মকর্তাদের জানান, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের এস-৩ (স্লিপার) কামরার যাত্রী ছিলেন তিনি এবং তার মা। তিনি নিজে দরজার কাছে ছিলেন। দুর্ঘটনায় ছিটকে বাইরে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারান। পরে জ্ঞান ফিরলে তার মাকে খুঁজে পাননি তিনি।

তবে ওই ব্যক্তি তাদের টিকিটের তথ্য দিতে পারেনি রেল কর্মকর্তাদের। কোথায় টিকিট কাটা হয়েছে তাও বলতে পারেননি। শুধু জানান, এক এজেন্ট তাদের টিকিট কেটে দিয়েছেন। এসব তথ্যের ভিত্তিতে সংরক্ষিত টিকিটের রিকুইজিশন স্লিপ ও প্রতীক্ষা তালিকায় খোঁজ শুরু করা হয়। যেসব স্টেশনে ওই ট্রেন থেমেছে বা যাত্রীরা উঠেছেন সেখানকার সিসি ক্যামেরার ছবি সংগ্রহে করে সন্ধান চলানো হয়। শালিমার, সাঁতারগাছি, খড়্গপুর, বালেশ্বর প্রভৃতি স্টেশন ছিল ওই তালিকায়।

তার পরে পিএনআর-তথ্য ধরে এস-৩ কামরার সব যাত্রীকে ফোন করে ওই নারীর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সব শেষে যাত্রীদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে সেখানে শেয়ার করা হয় ওই ব্যক্তির মায়ের ছবি। কিন্তু সেখানে কেউই কোনো হদিস দিতে পারেননি। এমনকি ওই কামরায় যারা উদ্ধারকাজ চালিয়েছিলেন তারাও জানান, এমন কোনো নারীকে দেখা যায়নি।

এরপরই রেল কর্মকর্তাদের প্রশ্নের মুখে ভেঙে পড়েন ওই ব্যক্তি। তখন তিনি জানান, তার মা ২০১৮ সালেই মারা গিয়েছেন। মূলত একটি চাকরির জন্য তার এই অভিনয়।

ওই ব্যক্তি জানান, তার কোনো ক্ষতিপূরণ প্রয়োজন নেই, কিন্তু একটি চাকরি খুব দরকার।

এদিকে মানবিকতার খাতিরে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি রেল বিভাগ। তবে তাকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের এক কর্মকর্তা বলেন, বালেশ্বরে ওই দুর্ঘটনায় মৃতদের বেশিরভাগই পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের বাসিন্দা। তাই ওই ব্যক্তিকে সাহায্য করার জন্য শেষ পর্যন্ত খোঁজ চালাতে হয়েছে আমাদের।

তারা জানান, এখনো ৮২টি মৃতদেহের দাবিদার মেলেনি। নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে হাদির জানাজায় শরিক হওয়ার আহ্বান

হান্নান মাসউদকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা

হাদির মৃত্যুর খবরে উত্তাল চট্টগ্রাম

আমাদের পথ ধ্বংসের নয়, পুনর্গঠনের : হাসনাত আবদুল্লাহ

‘আমরা সবাই হাদি হব, যুগে যুগে লড়ে যাব’

এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি প্রথম আলো কার্যালয়ের আগুন

ঢাবিতে বঙ্গবন্ধু হলের নাম বদলে এখন ‘শহীদ ওসমান হাদি হল’

গভীর রাতে সাধারণ জনগণকে যে আহ্বান জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার চেষ্টা

১০

গণমাধ্যমে হামলা ও আগুন: যা বললেন ভিপি সাদিক কায়েম

১১

কারও উসকানিতে পা না দিতে আহ্বান সংস্কৃতি উপদেষ্টার

১২

চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষুব্ধ ‘ছাত্র জনতার’ অবস্থান

১৩

হাদির খুনিদের হস্তান্তর না হলে আন্দোলন থামবে না: আসিফ মাহমুদ

১৪

ওসমান হাদির মৃত্যু: দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ

১৫

হাদির জানাজা কখন, জানাল ইনকিলাব মঞ্চ

১৬

শুক্রবার দেশে পৌঁছাবে হাদির মরদেহ

১৭

ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল জাবি 

১৮

‘আগুন সন্ত্রাস হাদি ভাইয়ের পথ নয়’

১৯

হাদির মৃত্যু: ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন-ভাঙচুর

২০
X