কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সাফ জবাব, বাড়ছে না যুদ্ধবিরতির মেয়াদ

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকায় ফিরছেন। ছবি : সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনিরা গাজা উপত্যকায় ফিরছেন। ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। তবে, এ প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।

শনিবার (০১ মার্চ) হামাসের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের দেওয়া প্রস্তাব মেনে নেবে না এবং দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো আলোচনাও চলছে না। খবর রয়টার্স।

এদিকে, হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম আল আরাবিয়া টেলিভিশনকে বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনা হচ্ছে না।

এই বক্তব্যের মাধ্যমে হামাস পরিষ্কার করে জানিয়ে দেয়, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা বা আলোচনা করতে আগ্রহী নয়, বরং প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলে আসবে বলে তাদের বিশ্বাস।

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি

গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং একই সঙ্গে বন্দিবিনিময় প্রক্রিয়া শুরু হয়। এই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ৪২ দিনে হামাস ৩৮ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে। পাল্টা হিসেবে ইসরায়েল প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে।

তবে, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর ১৬তম দিনেই দ্বিতীয় ধাপের জন্য আলোচনার কথা ছিল, যা চুক্তি অনুযায়ী শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে কোনো আলোচনা শুরু হয়নি, যা বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি

চুক্তি অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো সমঝোতা না হলে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে। তবে, দ্বিতীয় ধাপে যুদ্ধবিরতি সমঝোতা হলে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। বর্তমানে গাজায় ৫৯ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি জিম্মির জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং গাজা, মিসর সীমান্তসহ অন্যান্য অঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করার শর্ত আছে। হামাস এই চুক্তির শর্তের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বলেছে, তারা ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনিদের মুক্তি এবং সেনা প্রত্যাহারসহ একাধিক দাবি মেনে নিতে চায়।

চুক্তি ও যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ

বর্তমানে, গাজা উপত্যকার পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির এবং সংকটপূর্ণ। প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি সফল হলেও, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো সমঝোতা হয়নি। হামাসের এ সিদ্ধান্ত ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষের পথ আরও উন্মুক্ত করে দিয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে গাজার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে পারে।

হামাসের তরফে যখন দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো আলোচনা হচ্ছে না, তখন ইসরায়েলি সরকার তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। ইসরায়েল দাবি করছে, যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে এবং শান্তির জন্য তারা সম্ভাব্য সব উপায় অবলম্বন করবে, কিন্তু হামাসের এই অনীহা ইসরায়েলকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে প্ররোচিত করতে পারে।

এই অবস্থায়, গাজা অঞ্চলে মানবিক সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে, যেখানে খাদ্য, ওষুধ এবং মৌলিক সহায়তার অভাব দেখা দিয়েছে। যুদ্ধবিরতি সফল হলে কিছুটা হলেও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে, তবে যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ খুবই অনিশ্চিত।

এভাবে, যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে, যার উত্তর শুধুমাত্র পক্ষগুলো কীভাবে একে অপরকে সহযোগিতা বা আলোচনায় নিয়ে আসে তার ওপর নির্ভর করবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

টাইমস হায়ারের ইন্টারডিসিপ্লিনারি সায়েন্স র‌্যাঙ্কিংয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ঢাবি

যশোরে এবার রস-গুড় বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ১০০ কোটি টাকা

স্কুলে ভর্তির আবেদন শুরু শুক্রবার, কীভাবে করা যাবে জানাল মাউশি

মানব পাচার মোকাবিলায় বিচারিক প্রক্রিয়ার সহায়তায় বেঞ্চবুক উদ্বোধন

তারেক রহমানের ৬১তম জন্মদিনে ৬১টি কোরআন বিতরণ

খুলনায় বিজয় দিবস উদযাপনের প্রস্তুতি সভা

সোনমের ঘরে আসছে নতুন অতিথি

চেক প্রজাতন্ত্র / দুই ট্রেনের সংঘর্ষে আহত প্রায় অর্ধশত

এই ৫ লক্ষণ দেখলেই বুঝবেন কিডনি ক্যানসারে ভুগছেন

আগামী ৩-৪ কার্যদিবসের মধ্যে ‘গণভোট আইন’ করা হবে : আইন উপদেষ্টা

১০

এক দিনে ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৭৪৫

১১

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইনকিলাবকে হারিয়ে কালবেলার দ্বিতীয় জয়

১২

স্কুলশিক্ষার্থীদের নিয়ে লায়ন কল্লোলের হাইজিন ক্যাম্পেইন শুরু

১৩

খেজুর গাছ থেকে পড়ে শিবির নেতার মৃত্যু

১৪

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, আবেদন অনলাইনে

১৫

কায়সার কামালের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন মবিনা জান্নাত

১৬

সাভারে তারেক রহমানের জন্মদিনে মানবিক সেবা

১৭

আবারও ‘জেন-জি’ বিক্ষোভে উত্তাল নেপাল, কারফিউ জারি

১৮

‘মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তথ্যপ্রযুক্তির সমন্বয়ে আধুনিকভাবে শিক্ষিত হতে হবে’

১৯

টুর্নামেন্টে নিম্নমানের পুরস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

২০
X