কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৫, ০৯:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নিজ খরচে কোরবানির পশু পাঠাচ্ছেন দরিদ্র দেশে

সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী ৭৮ বছর বয়সী ভারতীয় মুসলমান হুসেইন আহমেদালি নলওয়ালা। ছবি : সংগৃহীত
সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী ৭৮ বছর বয়সী ভারতীয় মুসলমান হুসেইন আহমেদালি নলওয়ালা। ছবি : সংগৃহীত

ঈদুল আজহার মহিমা কেবল নিজ পরিবার বা শহরেই সীমাবদ্ধ নয়- এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে পৃথিবীর দরিদ্রতম জনপদেও। এমনই এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী ৭৮ বছর বয়সী ভারতীয় মুসলমান হুসেইন আহমেদালি নলওয়ালা।

যখন আমিরাতজুড়ে মুসলমানরা ঈদের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, তখন এই প্রবীণ প্রবাসী আফ্রিকার দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের মুখে কোরবানির হাসি ফোটাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নলওয়ালা গত পাঁচ বছর ধরে ঈদুল আজহার সময় নিজ খরচে কোরবানির পশু জবাই করে এর গোশত বিলিয়ে যাচ্ছেন ইয়েমেন, সোমালিয়া, সুদান ও ইথিওপিয়ার মতো দরিদ্র মুসলিমপ্রধান অঞ্চলে।

এক সময় শারজাহের আঙ্কর অ্যালাইড ফ্যাক্টরির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। অবসরের পর গড়ে তুলেছেন ‘দ্য নলওয়ালা ফাউন্ডেশন’, যার মাধ্যমে চলছে এই মহতী কাজ।

নলওয়ালার জীবনে মোড় আসে পাঁচ বছর আগে ইয়েমেন সফরের সময়। ভয়াবহ দারিদ্র্যের চিত্র দেখে তিনি ঠিক করেন- জীবনের বাকি সময়টি তিনি ব্যয় করবেন দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে। তিনি বলেন, ঈদের বরকত যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর মানুষও অনুভব করতে পারে, সেটাই আমার লক্ষ্য।

তার এই উদ্যোগে উটও কুরবানি দেওয়া হয়। একটি উটের গোশত প্রায় ৩০০টি পরিবারের মাঝে বিতরণ করা যায়, যারা বছরের পর বছর মাংসের স্বাদ পায় না। কুরবানির প্রতিটি পশু নির্বাচনের সময় স্বাস্থ্যপরীক্ষার ছবি তোলা হয়, যাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত থাকে এবং প্রাপকরা সম্মান ও মর্যাদাসহকারে গোশত গ্রহণ করতে পারেন।

শুধু আফ্রিকাই নয়, ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সুম্বল, বান্দিপুর, কারগিল অঞ্চলেও কুরবানির পশু পাঠান নলওয়ালা। মুম্বাইয়েও ছাগল কুরবানি দিয়ে প্রায় ১,৫০০ মানুষের মাঝে গোশত বিতরণ করেন তিনি। এমনকি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলিতেও তিনি মিষ্টি ও উপহার পৌঁছে দেন দুবাই ও শারজাহর শ্রমিক আবাসগুলোতে।

মুম্বাইয়ের বোইসারে গড়ে তুলেছেন একটি বৃদ্ধনিবাস, যেখানে আশ্রয় পান পরিত্যক্ত ও অসহায় প্রবীণরা। শুধু আশ্রয়ই নয়, এই বৃদ্ধদের বিভিন্ন কাজে যুক্ত করে সমাজে অবদান রাখার সুযোগ করে দেওয়া হয়।

নলওয়ালার কথায়, ঈদ শুধু উৎসব নয়, এটি আত্মত্যাগ ও সহানুভূতির সময়। দান আমার কাছে উৎসব নয়, এটি জীবনধারা। প্রকৃত দান মৌসুমি হয় না, বরং এটি জীবনচর্চার একটি মূল ভিত্তি হওয়া উচিত।

এই নিবেদন মুসলিম সমাজের জন্য এক বড় অনুপ্রেরণা। কুরবানির প্রকৃত শিক্ষা—আত্মত্যাগ, সহানুভূতি ও সেবার—তিনি নিজের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।

সূত্র : খালিজ টাইমস

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে বুলেটে জীবন যায় ওয়াসিমের

নতুন কোচ পেল হামজারা

শিশু সামিয়ার পাশে ঢাকার পুলিশ সুপার

গোপালগঞ্জে সমাবেশের মঞ্চে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা

জবি ছাত্রী হলের ফি প্রদানের নোটিশ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আবু সাঈদকে স্মরণ করে জামায়াত আমিরের স্ট্যাটাস

অভিজ্ঞতা না থাকলেও আবেদন করতে পারবেন সূর্যের হাসি নেটওয়ার্কে

লাশ পোড়ানো মামলা / পলাতক ৮ আসামিকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ইকোনমিক্স অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ

ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে কে এগিয়ে, কে পিছিয়ে!

১০

কয়রায় ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে আলোচনা সভা

১১

প্রকৌশলীকে লাথি মেরে বের করে দেওয়ার হুমকি জামায়াত নেতার

১২

গোপালগঞ্জকে সঙ্গে নিয়েই নতুন বাংলাদেশ গড়ব : তাসনিম জারা

১৩

অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সালমান শাহ গ্রেপ্তার

১৪

জেসিআই ঢাকা প্রেস্টিজের ব্যতিক্রমধর্মী সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত ও নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন

১৫

ভারতীয় সিনেমায় জয়াকে নিয়ে আপত্তি কংগ্রেস নেত্রীর

১৬

রাজনৈতিক কারণে পাঠ্যবইয়ে জায়গা হয়নি শহীদ ওয়াসিমের : ছাত্রদল সেক্রেটারি

১৭

আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পাসওয়ার্ড কতটা নিরাপদ

১৮

ইতিহাসে রেকর্ড দামের পর দরপতন বিটকয়েনের

১৯

এজাহার থেকে ৫ জনের নাম বাদ দেন সোহাগের বোন : ডিএমপি কমিশনার

২০
X