পারমাণবিক ইস্যুতে ইসরায়েলের হামলায় ইরানের একাধিক সামরিক কমান্ডার নিহত হয়েছে। এরপর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অবিরাম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে ইরান। শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের হারানোর পরও তেহরানের এই পুনর্গঠন সক্ষমতা ইসরায়েলকেও বিস্মিত করেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্লেষক।
কোয়েন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফটের ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাইটা পার্সি বলেন, ইসরায়েলিরা ইরানের পুনর্গঠন সক্ষমতাকে অবমূল্যায়ন করেছে। কারণ তারা (ইসরায়েলিরা) অত্যন্ত সফলভাবে ইরানের সামরিক বাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছিল।
দ্রুত পরিস্থিতির পরিবর্তন নিয়ে তিনি বলেন, ইসরায়েল বিশ্বাস করেছিল যে তারা ইরানের কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থাকে ব্যাহত করেছে। কিন্তু সেই ধারণা দ্রুত বদলে গেছে। এখন আমরা যা দেখছি তা হলো, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সব স্তর ভেদ করতে সফল হচ্ছে।
এদিকে সোমবার (১৬ জুন) ভোরেও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। হামলায় রাজধানী তেল আবিব ও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত পাঁচজন নিহত ও অনেক আহত হয়েছেন। হামলায় ঘরবাড়িতে অগ্নিকাণ্ড ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ইরান এখনো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে খুব বেশি প্রতিশোধমূলক কিছু করেনি বলে দাবি করেছে ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের প্রধান জামাল আবদি।
তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘ইরান এখন পর্যন্ত আমেরিকার ঘাঁটি বা সেনাদের ওপর কোনো হামলা চালায়নি। এটা প্রমাণ করে যে ইরান এখনো সংযম দেখাচ্ছে।’
ইরান এবার ইসরায়েলে ‘সুইসাইড ড্রোন’ পাঠিয়েছে। সোমবার (১৬ জুন) বার্তাসংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানের সেনাবাহিনীর গ্রাউন্ড ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কিয়ুমার্স হেইদারি বলেন, সেনাবাহিনী গত দুই দিনে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে কয়েক ডজন সুইসাইড ড্রোন’ নিক্ষেপ করেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় সেনাবাহিনী ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে বিস্ফোরণ ঘটাতে এই ড্রোনগুলো নিক্ষেপ করেছে।
টানা কয়েক দিন ধরে ইরান ও ইসরায়েলের হামলা ও পাল্টা হামলায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। গত ১৩ জুন ভোরে তেহরানসহ ইরানের বেশ কিছু স্থানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল।
পরে তীব্র শক্তি নিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা শুরু করে ইরানও। দফায় দফায় চলছে এই হামলা ও পাল্টা হামলা। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
মন্তব্য করুন