ইসরায়েলের টানা ২১ মাসের অবরোধ ও হামলায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গাজা। মঙ্গলবার রাত ও বুধবার ভোরে চালানো বিমান হামলায় অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
হামলায় গাজা সিটির একটি বাড়িতে ১২ জন নিহত হন, যার মধ্যে ছয়জন শিশু ও দুইজন নারী। আরও একটি হামলায় তল আল-হাওয়া এলাকায় ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীও ছিলেন। তৃতীয় একটি হামলায় মারা যায় তিন শিশু।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলি অবরোধ ও নৈরাজ্যের কারণে গাজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মে মাস থেকে খাবার নিতে গিয়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মার্কিন ঠিকাদারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে থাকা খাদ্যবিতরণ কেন্দ্রে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
১১৫টি মানবাধিকার সংস্থা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা নিজেদের সহকর্মী ও সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ‘ক্ষয়ে যেতে’ দেখছে। সংস্থাগুলো ইসরায়েলের সহায়তা বাধাগ্রস্ত করার নীতিকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে উল্লেখ করেছে।
এদিকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা চলছে। মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ বৃহস্পতিবার রোমে ইসরায়েলি উপদেষ্টা রন ডারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানা গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মতে, আলোচনায় অগ্রগতি হতে পারে।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৫৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল দাবি করে, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে হামলা চালাচ্ছে বলেই বেসামরিক প্রাণহানি ঘটছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে এবং ১২০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। এর মধ্যে ছিল সুড়ঙ্গ, বিস্ফোরক বস্তু এবং মিলিশিয়া ঘাঁটি।
এদিকে ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠী সম্প্রতি দুটি বেসামরিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে, যাকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। হুতিরা গাজার যুদ্ধ বন্ধে এই হামলার যুক্তি দেখালেও মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, এ ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন। তথ্যসূত্র : আরব নিউজ
মন্তব্য করুন