নারী মোটরসাইকেল আরোহীদের জন্য ইভেন্টের ঘোষণা দেয় একটি ক্যাফে। সেই ইভেন্টের ঠিক আগের দিন পুলিশ অভিযান চালিয়ে ক্যাফেটি সিলগালা করে দেয়।
বৃহস্পতিবার রাতে ইরানের রাজধানী তেহরানের উত্তরে অবস্থিত ওই ক্যাফে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্যাফের ইনস্টাগ্রাম পেজে শুক্রবার ইভেন্ট আয়োজনের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। এ দিন অংশগ্রহণকারীদের জন্য একটি ডিজে এবং নগদ পুরষ্কার দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু পরে পুলিশের সাঁটানো বন্ধের নোটিশের একটি ছবি পোস্ট করে ফলোয়ারদের যোগদান না করার আহ্বান জানায় ক্যাফে কর্তৃপক্ষ।
ব্যাপক আইনি বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের শহরগুলোতে আরও বেশি সংখ্যক নারী মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছেন। বিশেষ করে নীতি পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভের পর থেকে নারীদের মোটরসাইকেল চালানোর হার বাড়ছে। কর্মকর্তাদের মতে, এই প্রবণতা তেহরানের বাইরে ইয়াজদ এবং অন্যান্য প্রদেশের মতো জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে।
বর্তমান আইন অনুসারে, ইরানি নারীদের মোটরসাইকেল লাইসেন্স পেতে বিভিন্ন বাধার সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। ২০১০ সালে পাস হওয়া ট্রাফিক কোড সংশোধনীতে কেবল পুরুষদেরই সুযোগ রাখা হয়েছে। নারীদের বাইক চালানোর ক্ষেত্রে আইনি কোনো স্বীকৃতির বিধান রাখা হয়নি। ফলে তারা লাইসেন্সও পাচ্ছেন না। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো একটি অপরাধ। তবুও নারী আরোহীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ অসম। পুলিশ তাদের বিবেচনার ভিত্তিতে মাঝেমধ্যে সতর্কতা জারি বা বাইক জব্দ করছে।
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সংসদীয় বিষয়ক কার্যালয়ের ডেপুটি কাজেম দেলখোশ আগস্ট মাসে বলেছিলেন, সরকার নারীদের বাইক চালানোর সুযোগ দেওয়ার দাবি বিবেচনা করছে। তিনি বলেন, আমরা যেসব নারী বাইক চালাতে চান তাদের জন্য আইন প্রণয়ন করছি। নারী বিষয়ক কার্যালয়ও একটি বিল নিয়ে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, যদি কোনো নারী আরোহী আহত হন বা কারও ক্ষতি করেন, তবে তাকে জবাবদিহি করার জন্য বা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যও নতুন আইন নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা বর্তমান নিষেধাজ্ঞা নিয়ে অস্বস্তিতে রয়েছেন। বিদ্যমান আইন অনুসারে, নারী মোটরসাইকেল চালকদের জন্য লাইসেন্স দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শহরের রাস্তায় শত শত নারীদের বাইক চালাতে দেখা যায়। ফলে পুলিশও ব্যাপক হারে অভিযান চালাতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে।
মন্তব্য করুন