ফিলিস্তিনিদের জীবন কতটা অসহায়, এই দৃশ্যই বলে দিচ্ছে সে কথা। নিরপরাধ এসব মানুষ নিহত হয়েছেন ইসরায়েলি হামলায়। স্বজনরাও সে খবর পাননি। তাই শেষ বিদায়েও প্রিয় বাবা-মা অথবা আদরের সন্তানকে একটি বারের জন্যও দেখার সৌভাগ্য হলো না তাদের।
স্থানীয় সময় বুধবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনেস এলাকার একটি গোরস্থানে মাটিচাপা দেওয়া হয় শতাধিক ফিলিস্তিনিকে। সে সময় নিহতদের পাশে ছিলেন না কোনো স্বজন।
সময় ও পরিস্থিতির কারণে কবর খোঁড়ারও অবকাশ নেই। একটি এক্সেভেটরের মাধ্যমে মাটি খনন করে সারি সারিভাবে শুইয়ে দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয় এসব মরদেহ। নীল পলিথিনে মোড়া এসব মরদেহ জানান দিচ্ছে গাজাবাসীর অসহায়ত্বে কথা। হয়তো ধিক্কার দিচ্ছে বিশ্ব মানবতাকে।
অঞ্চলটির ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জরুরি কমিটির সদস্য বাসেম দাবায়েশ বলেন, এসব শহীদদের বিদায় জানানোর মতো কেউ ছিল না। তাই দাফনের জন্য গণকবর খনন করেছেন তারা। বলেন, এসব শহীদদের স্বজনরা জানেনও না যে তাদের প্রিয়জন আর পৃথিবীতে নেই।
গেল বুধবার গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের অনুমোদন দেয় ইসরায়েল। কিন্তু এখনো গোটা উপত্যকাজুড়ে আকশ ও স্থলপথে হামলা অব্যাহত রেখেছে তারা। নতুন এই চুক্তি অনুযায়ী-ইহুদি অধ্যুষিত ইসরায়েলকে মেনে নিতে হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের বেশকিছু শর্ত।
টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময় গাজা উপত্যকার সব এলাকায় সামরিক যান চলাচল বন্ধ রাখবে ইসরায়েল। চিকিৎসা ও জ্বালানিসহ শতশত মানবিক সহায়তার ট্রাককে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতিকালীন চার দিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মোট ৬ ঘণ্টা ড্রোন উড়ানোও বন্ধ থাকবে।
ওই বিবৃতিতে হামাস আরও জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চলাকালীন গাজা উপত্যকার সমস্ত অঞ্চলে কাউকে আক্রমণ বা গ্রেপ্তার করতে পারবে না ইসরায়েল। এ ছাড়া সালাহ আল দ্বীন স্ট্রিটে চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার শর্তও দিয়েছে হামাস।
টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ চুক্তির আওতায় ৫০ ইসরায়েলিকে মুক্তি দিবে হামাস। বিপরীতে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা দেড়শ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন