ফিলিস্তিনে চালানো ইসরায়েলের অভিযান ক্রমেই যেন দীর্ঘ হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হলেও তাতে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি কোনো পক্ষই। এমন পরিস্থিতিতে গাজায় শান্তি ফেরাতে তিনটি শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে লেখা এক কলমে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তিন শর্তে গাজায় শান্তি ফিরতে পারে। এ তিন শর্ত হলো- হামাসকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করা, গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ ও ইহুদিদের প্রতি ফিলিস্তিনিদের বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব দূর করা।
ইসরায়েলের দাবি, গাজায় হামাসকে নির্মূলের জন্য অভিযান চালিয়ে আসছে তারা।
এদিকে হামাসকে নির্মূলের অজুহাতে গাজায় অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে পুরোপুরি নির্মূলের আগ পর্যন্ত এ অভিযান বন্ধ করবে না বলছে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন বেসামরিক লোক।
গাজায় ইসরায়েলের প্রথম শর্তটি হলো হামাসকে নির্মূল করা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসকে নির্মূল করতে ইসরায়েলের এ হামলায় তাদের জোর সমর্থন দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জামার্নিসহ বিভিন্ন দেশ। নেতানিয়াহু প্রশাসনকে অভিযানের লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্যে তাদের গাজার সামরিক সক্ষমতা রুখে দিতে হবে এবং গাজার শাসন থেকে হামাসকে অবসান ঘটাতে হবে।
দ্বিতীয় শর্তে ইসরায়েল বলছে, গাজাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ইসরায়েলে হামলার জন্য গাজাকে পুনরায় কখনো সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এজন্য উপত্যকার সীমান্তে সাময়িক নিরাপত্তা জোন স্থাপন করা দরকার। এছাড়া গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্ত পথ রয়েছে। এ পথ দিয়েই সেখানে অস্ত্রের চালান ঢুকছে। ফলে মিসরের রাফান সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো জরুরি।
তৃতীয় শর্তের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্কুলগুলোতে শিশুদের এটা শেখাতে হবে যে, মৃত্যুর চেয়ে বেঁচে থাকা মূল্যবান। এমনকি জীবনের যত্ন নেওয়াটাও জরুরি। এছাড়া ফিলিস্তিনি ইমামদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে, সেখানকার ইমামরা সমসময়ে বক্তব্যে ইহুদিদের হত্যার ব্যাপারে উসকানি দেয়। তাদের এগুলো বন্ধ করতে হবে। এছাড়া ফিলিস্তিনি জনগণ যাতে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে সমর্থন করে এজন্য সুশীলদেরও কাজ করতে হবে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কলামে বলা হয়েছে, আমরা যদি যুদ্ধ শেষের পর ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এমন সব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে। তাহলে তা হবে দিবাস্বপ্ন। কেননা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সেই ইচ্ছা বা সক্ষমতার কোনোটিই নেই।
মন্তব্য করুন