ফিলিস্তিনের দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার দাবি করেছে ইসরায়েল। এখন খান ইউনিস থেকে আরও দক্ষিণের রাফাহ শহরে অগ্রসর হবে ইসরায়েলি বাহিনী। বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এমনটাই জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট।
গাজার সর্বদক্ষিণের শহর হলো রাফাহ। এটি মিসরের সীমান্তবর্তী একটি শহর। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে দক্ষিণে সরতে সরতে সবশেষ এখানে গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বেশি আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। প্রচণ্ড ঠান্ডায় মূলত তাঁবু ও সরকারি ভবনে তারা বসবাস করছেন।
ইয়োভ গ্যালান্ট বলেন, হামাসের খান ইউনিস ব্রিগেডকে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই শহরে মিশন শেষ করব। এরপর রাফাহ শহরে অগ্রসর হব।
গত সপ্তাহে খান ইউনিস শহরে স্থল অভিযানে নামে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের হামলায় শহরটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বহু বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। শহরের সবচেয়ে বড় দুটি হাসপাতাল নাসের ও আল-আমলে পর্যন্ত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকলেও ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নতুন চুক্তি আলোচনা থেমে নেই। ইতিমধ্যে চুক্তির প্রস্তাব হামাসের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, তারা প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে দেখবে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটি ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে হামাসের হাতে এখনো বন্দি ইসরায়েলিদের মধ্যে বেসামরিক নাগরিকদের ছেড়ে দেওয়া হবে। পরবর্তী পর্যায়ে ইসরায়েলি সেনা হস্তান্তর এবং নিহত বন্দিদের মরদেহ ফেরত দেওয়া হবে। দুপক্ষের মধ্যে যদি এই চুক্তি হয় তাহলে যুদ্ধ শুরুর পর এতদিনের বিরতি এটাই প্রথম।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি ২৫৩ জনকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। গত নভেম্বরে কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় সাতদিনের যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে ১০০ বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। তবে তাদের তাদের হাতে এখনো ১৩২ জনের ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে।
অন্যদিকে হামাসের হামলার জবাবে ওই দিনই যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত মানুষের সংখ্যা ২৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া হাজার হাজার মরদেহ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে।
মন্তব্য করুন