রাজধানী তেহরানসহ কয়েকটি শহরের বিমানবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট বাতিল করেছে ইরান। সোমবার পর্যন্ত এসব শহরের বিমানবন্দর থেকে যাত্রীবাহী কোনো বিমান আকাশে উঠবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইরানের সরকার নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।
রোববার রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। নজিরবিহীন এ হামলার পর ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের শঙ্কা আরও বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ সব ফ্লাইট বাতিল করল তেহরান।
ইরান ও ইসরায়েল সংঘাতের শঙ্কায় সতর্কতা অবলম্বন করছে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশও। ইরাক তার আকাশসীমায় সবধরনের বিমান চলাচল স্থগিত করার কয়েক ঘণ্টা পর আবার আকাশসীমা খুলে দিয়েছে। তবে যে কোনো সময় আবারও আকাশসীমা বন্ধ করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
ইরাক ও ইসরায়েলের প্রতিবেশী জর্ডান এবং লেবাননও নিজ নিজ আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ইসরায়েলের আকাশসীমা।
মূলত, গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রোববার রাতে ইসরায়েলজুড়ে ৩০০টিরও বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান।
হামলার পরপর তেল আবিব ও পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর শব্দ শোনা গেছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। তাদের হামলায় ২০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ ইসরায়েলি সীমার বাইরে প্রতিহত করা হয়েছে।
শনিবার রাতের এই হামলাকে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে সীমিত ও নির্ধারিত বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি।
এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান।
মন্তব্য করুন