ইসরায়েলি ভূখণ্ডে গত শনিবার রাতে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরানের হামলা ছিল নজিরবিহীন। এর জবাবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এদিকে আগে থেকেই আছে সাইবার হামলার হুমকি। বলা হচ্ছে, সেটি শুরু হয়ে গেছে।
ইরানসংশ্লিষ্ট হ্যাকারদের একটি গ্রুপ দাবি করেছিল, হামলার আগে ইসরায়েলি রাডার সিস্টেম হ্যাক করা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের শীর্ষ সাইবার সংস্থা বলেছে, তারা অনলাইনে অস্বাভাবিক কোনো কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেনি।
ফরেন পলিসির এক নিবন্ধে বলা হয়, গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা ইসরায়েলে হামলা করার পর থেকে ইসরায়েলে ব্যাপকভাবে সাইবার আক্রমণ বেড়ে যায়।
ইসরায়েল ন্যাশনাল সাইবার ডাইরেক্টটরেটের প্রধান গ্যাবি প্রটনয় জানান, ইসরায়েল আগের চেয়ে তিনগুণ বেশি সাইবার আক্রমণের মুখোমুখি হচ্ছে।
রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার পাশাপাশি ইরানের সাইবার কর্মসূচিকেও হুমকি হিসেবে মনে করে ওয়াশিংটন। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাইবার লড়াই এক দশকের বেশি সময় ধরে চলছে।
২০০৬ সাল বা তার আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সাইবার অস্ত্র তৈরি ও প্রয়োগ শুরু করে। তাদের এ ধরনের একটি অস্ত্র হচ্ছে স্টাক্সনেট। যা অস্ত্র ব্যবহার করে ইরানের নাতাঞ্জ পারমাণবিক স্থাপনায় কম্পিউটার সিস্টেম ধ্বংস করার অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালে প্রথম এ অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়টি সামনে এলে ইরান তাদের সাইবার কর্মসূচি শুরু করে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের কৌশলগত প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা কর্মসূচির পরিচালক মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, তিনি ইসরায়েলকে সাইবার জগতের সুপারপাওয়ার আর ইরানকে উদীয়মান সাইবার শক্তি হিসেবে মনে করেন।
ইরান ও ইসরায়েলের সাইবার জগতের প্রতিযোগিতা সবচেয়ে পুরোনো প্রতিযোগিতাগুলোর একটি। ইরান ইসরায়েলি স্টাক্সনেট সাইবার প্রোগ্রামটিকে নিজস্ব কৌশলে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের সহযোগিতায় ইসরায়েল সাইবার জগতে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। দেশটির জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার পাশাপাশি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছে ইউনিট ২৮০০ নামের গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করার পৃথক বিভাগ আছে। এখান থেকেই মার্কিন সহযোগিতা নিয়ে আক্রমণাত্মক সাইবার অভিযান পরিচালনা করে আইডিএফ।
মন্তব্য করুন