গাজায় যুদ্ধ বন্ধে তিন স্তরের প্রস্তাবনা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্টের এ পরিকল্পনা মেনে নিলে জোট ভাঙার হুমকি দিয়েছেন দেশটির কট্টর ডানপন্থি দুজন মন্ত্রী। রোববার (০২ জুন) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ প্রস্তাবনা পেশ করেন। তার প্রস্তাবনার পর বিষয়টি মেনে নিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের প্রতি আহ্বান জানান। এরপর এক বিবৃতিতে বিষয়টি ইতিবাচকভাবে বিবেচনার কথা জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।
ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালের স্মাটরিচ ও নিরাপত্তাবিষয়কমন্ত্রী ইতামার বেন-গিভির বলেন, তারা হামাসকে নির্মূলের আগে কোনো ধরনের চুক্তির বিরোধী। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনায় নেতানিয়াহু রাজি হলে তাকে সমর্থনের অঙ্গীকার জানিয়েছেন বিরোধীদলের নেতা ইয়ার লাপিদ।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের সক্ষমতা শেষ না করা পর্যন্ত তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। জিম্মিদের না ফেরানো এবং হামাসকে যতক্ষণ ইসরায়েলের জন্য হুমকি মনে হবে ততক্ষণ এ যুদ্ধ চলবে বলেও জানান তিনি।
বাইডেনের পরিকল্পনায় তিন পর্বের এই প্রস্তাবের শুরুতে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধ বিরতির কথা বলা হয়েছে। এটি হবে যুদ্ধ বিরতির প্রথম পর্যায়। এ সময়ে গাজার সব জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হবে। এ সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা চলমান থাকবে। যদি আলোচনা সফল হয়, তাহলে পরবর্তী পর্যায়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করা হবে।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী স্মাটরিচ বলেন, প্রস্তাবিত রূপরেখা মেনে নিলে এবং হামাসকে নির্মূল না করে ও জিম্মিদের না ফিরিয়ে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি হলে সরকারে থাকব না।
অর্থমন্ত্রীর মতো একই সুরে কথা বলেছেন নিরাপত্তামন্ত্রী বেন-গিভির। তিনি বলেন, এ চুক্তির অর্থ হলো যুদ্ধের অবসান এবং হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্য থেকে সরে আসা। এটি একটি বেপরোয়া চুক্তি। এ চুক্তিতে ইসরায়েলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার চেয়ে ক্ষমতাসীন জোট ভেঙে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
মন্তব্য করুন