কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিউজিল্যান্ডে এনে ১১৫ বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিককে শোষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার বিস্তৃত তদন্ত শুরু করেছে নিউজিল্যান্ড সরকার।
নিউজিল্যান্ড ইমিগ্রেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশটির ব্যবসা, উদ্ভাবন ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় (এমবিআইই) গত সপ্তাহে ওই ঘটনায় গভীর ও ব্যাপক পরিসরে তদন্ত শুরু করেছে।
প্রবাসী ওই সব নাগরিকদের বসবাসের অনুপযোগী একটি ঘরে রাখা হয়। ওই ঘরটি আয়তনে ছিল খুবই ছোট। এতে এত লোকের থাকা অসম্ভবের মতো একটি ব্যাপার এবং অস্বাস্থ্যকর।
নিউজিল্যান্ড ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে বলে, আমাদের তদন্তকারীরা ১১৫ জন ভারতীয় ও বাংলাদেশী নাগরিকের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা স্বীকৃত সরকারি এমপ্লয়মেন্ট ওয়ার্ক ভিসায় (এইডব্লিউভি) নিউজিল্যান্ডে এসেছিলেন। তখন কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি এবং ভিসা পাওয়ার জন্য তারা যথেষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচ করেন। কিন্তু এখন তাদের অধিকাংশই কাজ পাননি।
ভিসা ও কাজের জন্য প্রবাসীরা এজেন্টদের কত টাকা দিয়েছেন তার একটি ধারণা দিয়েছে স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই প্রবাসীরা ১৫ হাজার ডলার থেকে ৪০ হাজার ডলার পর্যন্ত এজেন্টদের দিয়েছেন। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ পরিশোধের পরও কেন তাদের কাজ দেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যাক্রেডিটেড এমপ্লয়ার ওয়ার্ক ভিসা (AEWV) অস্থায়ী কাজের ভিসা। এর আওতায় আসা প্রবাসীদের একটি অংশ কয়েক মাস ধরে নিউজিল্যান্ডে রয়েছেন। বাকিরা সম্প্রতি দেশটিতে পৌঁছান।
এদিকে ভারতীয় হাইকমিশন গত শুক্রবার এক টুইটবার্তায় বলে, ‘অকল্যান্ডে ভারতীয় শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়ে জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা তাদের সহায়তা করার জন্য যাই। কর্মীদের খাদ্য ও কনস্যুলার পরিষেবা সরবরাহ করা হয়েছে। আমরা সব পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। নিউজিল্যান্ডে ভারতীদের কল্যাণে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
দ্য নিউজিল্যান্ড হেরাল্ড সংবাদপত্রের এক প্রতিবেদন অনুসারে, স্বীকৃত নিয়োগকর্তা ওয়ার্ক ভিসা প্রকল্পে কর্মী শোষণ এবং লঙ্ঘনের আরও অভিযোগ উঠেছে। এমন ১৬৪টি অভিযোগের তদন্ত চলছে। গত বছরের জুলাই মাসে এ প্রকল্প শুরু হয়। এর আওতায় ২৭ হাজার ৯০০ স্বীকৃত নিয়োগকর্তার মাধ্যমে ৮১ হাজার ভিসা অনুমোদন করা হয়।
প্রবাসী কর্মীদের শোষণ ঠেকাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, পক্ষপাতহীনভাবে আগে থেকে নিয়োগ কর্তার খোঁজ করা। যাতে কর্মীরা ভুয়া কোনো প্রতিশ্রুতিতে প্রতারণার শিকার না হন। এর মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ নিশ্চিত করা।
এ বিষয়ে নিউজিল্যান্ডের ইমিগ্রেশনমন্ত্রী অ্যান্ড্রু লিটল দ্রুত স্বাধীন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মন্তব্য করুন