কালবেলা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাটা মাথাটি কেন ২০০ বছর ধরে সংরক্ষিত?

ডিয়োগো আলভেসের কাটা মাথা এভাবেই একটি জারে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত
ডিয়োগো আলভেসের কাটা মাথা এভাবেই একটি জারে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

প্রায় ২০০ বছর ধরে একটি কাটা মাথা কাচের জারে সংরক্ষিত আছে। যার চোখের দৃষ্টি শান্ত এবং উদ্বেগহীন। যেন নিষ্পাপ একখানি মুখ। তবে নিষ্পাপ মনে হওয়া এই মানুষটি ছিলেন ভয়াবহ হিংস্র। তার নির্মমতার কারণেই গোটা বিশ্ব তাকে আলাদা করে চিনেছে।

কাটা মাথার এই ব্যক্তি ছিলেন একজন সিরিয়াল কিলার। যার নির্মমতার গল্প যে কারও মনেই ভয় ধরিয়ে দেবে। এ কারণে ১৮২ বছর পরেও তার কথা উঠলে মানুষ ভয় পায়।

কারণ, টাকা রোজগারের লোভে নিষ্ঠুরতরা সব সীমা অতিক্রম করেছিলেন তিনি। যার শাস্তি হিসেবে তাকে ফাঁসি দেওয়া হলেও এখনো মাথাটি সংরক্ষণ করা আছে।

এই কাটা মাথাটি পর্তুগালের সিরিয়াল কিলার ডিয়োগো আলভেস। ১৮১৯ সালে স্পেনের গ্যালিসিয়া শহরে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম তার।

ডিয়োগো আলভেস নিয়ে দ্য সানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেসব ও ইন্টারনেট ঘেঁটে জানা গেছে, পরিবার দরিদ্র হওয়ায় পড়াশোনা করতে পারেননি। কাজের সন্ধানে অনেক দিন ঘুরে অবশেষে পর্তুগালের লিসবন সিটিতে এসে পৌঁছান তিনি। কিন্তু সেখানেও কাজ জোটেনি তার। অর্থের জন্য শেষমেশ অপরাধ জগতে পা বাড়ান ডিয়াগো।

অপরাধ জগতে প্রবেশে করেই শস্য ও সবজি বিক্রি করে বাড়ি যাওয়া কৃষকদের লুটপাট শুরু করেন ডিয়াগো। একটি সেতু ঘিরে তার ঘাঁটি তৈরি হয়। সেই জায়গাটাকে তিনি অপরাধের ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নেন। সেখান দিয়ে যাতায়াতকারীদের টার্গেট করতে শুরু করেন।

ডিয়োগো পরে এতটাই হিংস্র হয়ে উঠে যে লুটপাটের পর সে মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা শুরু করেন। হত্যার পর ২১৩ ফিট উঁচু সেতু থেকে মৃতদেহ পানিতে ফেলে দিতেন। ১৮৩৬ থেকে ১৮৩৯ সাল পর্যন্ত সে প্রায় ৭০ জনকে হত্যা করেছিলেন ডিয়োগো। প্রতিবারই পুলিশ খুনের ঘটনাগুলোকে আত্মহত্যার মামলা বলে বন্ধ করে দিত।

তবে ব্রিজের নিচে পাওয়া কয়েকজনের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশের টনক নড়ে। তাদের গায়ে গভীর আঘাতের চিহ্ন ছিল। এরপরই সন্দেহ হয় পুলিশের। তদন্ত শুরু করলে কয়েকদিনের মধ্যেই নিশ্চিত হয়ে যায়, কৃষকদের হত্যার পরই সেতু থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছে। খুনির খোঁজে পুলিশ হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকে।

বিষয়টি টের পেয়ে মাটির নিচে ডেরা করে গা ঢাকা দেন ডিয়াগো। এ সময় নিজের দল গঠন করেন তিনি। সেই দলের অধিকাংশই ছিল দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এবার শহরে বসবাস করা ধনী পরিবারগুলোকে টার্গেট করতে শুরু করে ডিয়োগো।

একদিন দলবল নিয়ে একজন বিখ্যাত ডাক্তারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হত্যা করেন এই সিরিয়াল কিলার। সেই খুনের পরই পুলিশ রাস্তা আটকে তাকে আটক করে। ডিয়োগো নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন। ডিয়োগো জানান, সে কতজনকে হত্যা করেছে সেটা তার মনেই নেই।

১৮৪১ সালে ডিয়োগোকে ফাঁসি দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা সিদ্ধান্ত নেন—অপরাধীরা কীভাবে চিন্তা করেন তা খুঁজে বের করতে ডিয়োগোর মাথা কেটে লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষণ করা হবে। তার মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে এত বছর পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মাথা একইভাবে রাখা রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রোববার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

২৪ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

সাতসকালে দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনা, বাসে ছিলেন গণঅধিকার পরিষদ নেতা

তামাকবিরোধী ইয়ুথ মার্চ  / তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাতিল, দ্রুত আইন পাসের আহ্বান

দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সিট পেয়ে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে : ফজলুর রহমান

নেতাকর্মীদের ধৈর্যশীল আচরণের আহ্বান আমিনুল হকের 

বাংলাদেশ হবে বসবাস ও বিনিয়োগের স্বর্গ: আব্দুল মুক্তাদির

ঢাকায় অ্যাপোলো ক্লিনিকের যাত্রা শুরু

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামকে দেখতে হাসপাতালে ডা. রফিক

একাত্তরের ইস্যুর সমাধান চাইল এনসিপি

১০

রাজধানীতে তামাকের বিরুদ্ধে ‘ইয়ুথ মার্চ’

১১

বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নারী-শিশুসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

১২

ত্রিবার্ষিক সম্মেলন / আবারও জামালপুর জেলা বিএনপির নেতৃত্বে শামীম-মামুন

১৩

দাবি আদায় ছাড়া ঘরে না ফেরার ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীর

১৪

লিডসের বিরুদ্ধে আর্সেনালের গোল উৎসব

১৫

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি

১৬

এনসিপির কর্মকাণ্ডে ফিরছেন সারোয়ার তুষার

১৭

যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার 

১৮

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

১৯

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

২০
X