নির্বাচন শেষ। সরকার গঠন নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কারণ এবারও করতে হচ্ছে জোট গঠন। এখন দেশটির নেতৃত্বে কে আসবে এটাই দেখার অপেক্ষা। যদিও এ দৌড়ে এগিয়ে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)।
এবারের ভোটে বাজিমাত করে দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রীতিমতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন এখনো তার জনপ্রিয়তা কতটা। নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধ করা হলেও ভোটের ভেলকিতে আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনিও।
নাটকীয়তায় মোড়ানো পাকিস্তানের এই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ ছিল মানুষের। বিশেষ করে ইমরান খানকে কেন্দ্র করে। বিশ্ব মিডিয়ার চোখ ছিল কী ঘটতে যাচ্ছে দেশটিতে। এমনকি নজর রেখেছিল পশ্চিমারাও। অবশেষে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণার আগেই পাকিস্তান নিয়ে অবস্থান তুলে ধরেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইইউ। খবর আল জাজিরার।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন পাকিস্তানের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেই সঙ্গে নির্বাচন ঘিরে সুষ্ঠু তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে তারা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ দলীয় কর্মীদের গ্রেপ্তারসহ হস্তক্ষেপের অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছে এবং যোগ করেছে যে অনিয়ম, হস্তক্ষেপ এবং জালিয়াতির দাবিগুলো সম্পূর্ণ তদন্ত করা উচিত।
এদিকে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন নির্বাচনের সুষ্ঠুতা এবং অন্তর্ভুক্তির অভাব সম্পর্কে প্রশ্ন উত্থাপন করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, তারা এই নির্বাচন গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। এই নির্বচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন, ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধের মতো ঘটনার নিন্দা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
তবে পাকিস্তানে পূর্ণাঙ্গ ফলাফলের পর যে দলেই সরকার গঠন করবে তাদের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, ইসলামাবাদকে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এবং বিনিয়োগে সহযোগিতা করবে তারা। এ ছাড়াও, পাকিস্তানের গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন্ন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতেও কাজ করার কথা জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
গেল ৭৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্থান-পতন দেখছে বিশ্ব। তবে সব মিলিয়ে পাকিস্তান-যুক্তরাষ্ট্র খুব ভালো বন্ধু বলে আগেই জানিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবিচল অংশীদার। তবে এবারের রাজনৈতিক অস্থিরতার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে ইমরান খান বেশি দায়ী করে আসছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংকট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অগ্রাধিকার হওয়ার সম্ভাবনা কম।
মন্তব্য করুন