জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সেবা দিতে ‘মোবাইল ডাটা টার্মিনাল সার্ভিস (এমডিটি) প্রকল্প’ চালু করা হয়েছিল। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে কেনা হয়েছিল অন্তত ২০০টি এমডিটি ডিভাইস। পরীক্ষামূলকভাবে তা দেওয়া হয়েছিল পুলিশের মেট্রোপলিটন থানাগুলোতে। কথা ছিল থানা পুলিশ টহল গাড়িতে সেই ডিভাইস স্থাপন করবে; কিন্তু থানার গাড়িতে বসেনি ডিভাইস, অনেকগুলো পড়ে থেকে হয়েছে বিকল। কোনো কোনো থানার অফিসার ইনচার্জ বিষয়টি ভুলেও গেছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের আটটি ক্রাইম বিভাগের বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করে জানা গেছে, এমডিটি ডিভাইসের জন্য নির্ধারিত টহল গাড়ি দরকার। এর জন্য দরকার নির্ধারিত একজন কর্মকর্তাও। থানায় টহল গাড়ির সংখ্যা কম থাকা এবং নির্ধারিত কর্মকর্তা না থাকায় এই ডিভাইস রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হয়নি।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর কর্মকর্তারা বলছেন, ভুক্তভোগীরা পুলিশের সহায়তা পেতে কল দিলে তারা সেই কলটি সংশ্লিষ্ট থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়ে দেন। অনেক সময় সেবাগ্রহীতার মোবাইল নম্বর রেখে তা থানায় দেওয়া হয়। এরপর থানার ডিউটি অফিসার সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বরত টহল পুলিশকে জানালে তিনি সহায়তার জন্য যান। এতে প্রচুর সময় ব্যয় হয়, এমডিটি ডিভাইস সক্রিয় থাকলে পুলিশের সহায়তা চাওয়া ব্যক্তির সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা অফিস থেকেই সরাসরি সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তার সংযোগ করিয়ে দেওয়া সম্ভব। কারণ, ওই ডিভাইস সক্রিয় থাকলে জাতীয় জরুরি সেবা সেন্টার থেকে সার্ভারের মাধ্যমে দেখা যেত, সেবাপ্রত্যাশীর কাছাকাছি পুলিশের কোন টহল টিম রয়েছে।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ কালবেলাকে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে দেশের প্রতিটি মেট্রোপলিটন এলাকার থানাগুলোতে এমডিটি সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। বাস্তবতা হচ্ছে, নানা কারণে এটি স্বয়ংক্রিয় রাখা সম্ভব নয়।
কেন এই ডিভাইস সচল করা গেল না—সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মিলেছে নানা তথ্য। প্রায় ছয় বছর পর এসে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই এমডিটি সার্ভিসের জন্য নির্দিষ্ট টহল গাড়ি প্রয়োজন যেটি শুধু ৯৯৯-এর সেবা দেওয়ার জন্যই ব্যবহার করা হবে। কারণ, ডিভাইসটি বসাতে হবে স্থায়ীভাবে। বিভিন্ন মেট্রোপলিটনের থানায় একটি টহল গাড়ি নানান কাজে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে ভাড়া করা কিছু গাড়ি কিংবা লেগুনা নিয়ে টহল দেয় পুলিশ। এসব গাড়িতে ডিভাইস বসানো সম্ভব নয়। আবার এসব ডিভাইস ব্যবহার করার জন্য আলাদা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা প্রয়োজন।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি মো. মাসুদ আলম বলেন, ‘৯৯৯-এর জন্য আলাদা কোনো ডিভাইস আমাদের কোনো টহল গাড়িতে দেওয়া হয়নি।’
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন কালবেলাকে জানান, মিরপুর মডেল থানার টহল গাড়িতে ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে না।
হাতিরঝিল থানার ওসি শাহ মো. আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের থানায় টহল গাড়িতে কোনো ডিভাইস দেওয়া হয়নি।’ একই তথ্য দেন আদাবর থানার ওসি শাকের মো. জুবায়ের।
মন্তব্য করুন