মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ এএম
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষায় একটি প্রস্তাবনা

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষায় একটি প্রস্তাবনা

গত ২৯ জুলাই দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘প্রাথমিকে নিয়োগ পাবেন সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫৮৩টি ক্লাস্টারে একজন করে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তারা ওই ক্লাস্টারের প্রতিটি বিদ্যালয়ে এই দুটি বিষয়ে শিক্ষা দেবেন। পরে সরকার প্রয়োজন মনে করলে দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে এই দুই বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করবে।

এই সংবাদটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা বিষয়ে সচেতন মহলকে অনুপ্রাণিত করেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষাবিষয়ক শিক্ষক যেহেতু নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, সেহেতু ধর্ম শিক্ষার জন্য শিক্ষক নিয়োগ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক কেন প্রয়োজন, সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করা যাক।

২০২১ সালের জনশুমারি অনুসারে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯১.০৪ শতাংশ মুসলমান। বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মুসলমান অধ্যুষিত এ দেশের প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা যথাযথ ধর্ম শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক সহযোগিতা ও পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের সিলেবাস যথেষ্ট সমৃদ্ধ। কিন্তু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের কোনো বিশেষজ্ঞ শিক্ষক নেই। ফলে সমৃদ্ধ সিলেবাস থাকলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সহিহ-শুদ্ধ করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে না বা নামাজসহ ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত হতে পারে না। অনেক ধর্মপ্রাণ অভিভাবক পবিত্র কোরআন ও ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জ্ঞান দানের তাগিদে সন্তানকে নূরানি বা অন্যান্য মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। মাদ্রাসায় ভর্তি দোষের কিছু নয়। কিন্তু দেখা যায়, নূরানি পর্যায়ের পড়াশোনা শেষে অনেক অভিভাবক সন্তানকে ফের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। বারবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের ফলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী সহপাঠীদের সঙ্গে পড়াশোনায় তাল মেলাতে পারে না এবং অচিরেই স্কুল থেকে ড্রপ আউট হয়ে পড়ে।

এ লেখার শুরুতে আলোচিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগের মতো করে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হলে বর্তমান পাঠ্যক্রমের অধীনেই শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় ধর্মীয় শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। এ ছাড়া সারা দেশে ৬৫ হাজারের অধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে ধর্ম শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হলে আলিয়া ও কওমি মাদ্রাসার নির্দিষ্ট ডিগ্রিধারী আলেম অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬৫ হাজার পদ সৃজন কিছুটা সময়সাপেক্ষ হওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্ম শিক্ষায় কার্যকরভাবে সংযুক্ত করা যেতে পারে। সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত অঞ্চলে মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমকে কাজে লাগানো যেতে পারে। এ ছাড়া প্রতিটি ‘স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি’ নিজ নিজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় একজন করে আলেম নিয়োগ করতে পারে। সকালে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগে কিছুটা সময় ধর্ম শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহিহ-শুদ্ধ করে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শেখাতে পারেন এবং নামাজসহ ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে পাঠ্যক্রম অনুযায়ী পাঠদান করতে পারেন।

লেখক: উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তানাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রিপেইড মিটারে রিচার্জ বন্ধ, ভোগান্তিতে ৪২ হাজার গ্রাহক

শিক্ষানীতি মানছেন না সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ শিক্ষক

অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভয়ে পালালেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

সিভাসুতে তিন কর্মকর্তার পদাবনতি

দেশের শত্রুরাই পিআর নির্বাচনের বিরোধিতা করতে পারে : চরমোনাই পীর

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ঘোষণা, দুটিতে লড়বেন ফয়জুল করীম

দুই সন্তানসহ গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর নিখোঁজ

ওয়ার্ডপ্রেস কন্ট্রিবিউশনের গর্বিত মুখ বাংলাদেশের নাসিম

বরিশালে এনসিপির পদযাত্র‍ায় ২০ সহস্রাধিক জনতার জমায়াতের প্রস্তুতি

১৪৮ বছরের টেস্ট ইতিহাসে নতুন করে লেখালেন স্টার্ক

১০

মালয়েশিয়ায় প্রবেশের সময় ৯৬ বাংলাদেশি আটক

১১

চেয়ারে শহীদদের স্বজনেরা, মেঝেতে বসেন ৫ উপদেষ্টা

১২

শ্যামলীতে ছিনতাইকারীদের একজন গ্রেপ্তার, মোটরসাইকেল জব্দ

১৩

নারীদের বীরত্বপূর্ণ অবদানে জুলাই উইমেন্স ডে উদযাপন

১৪

এসএসসি-এইচএসসিতে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর

১৫

মাকে জীবনের জন্য হুমকি দাবি, বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি ছেলে 

১৬

চরমোনাইর দরবারে এনসিপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল

১৭

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে এনসিপির বিক্ষোভ মিছিল 

১৮

বাড়ির পেছনে পড়ে ছিল শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ

১৯

আশুলিয়া কলেজ প্রশাসনের ভুলে বিপাকে ১৮৬ এইচএসসি পরীক্ষার্থী

২০
X