সাকিবুল হাছান
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫০ এএম
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:০৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চারদিক

ছিনতাইয়ের ভয়াবহতা বন্ধ হোক

ছিনতাইয়ের ভয়াবহতা বন্ধ হোক

সম্প্রতি ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনলেই একটা নির্দিষ্ট জায়গার নাম মাথায় আসে আর সেটা হচ্ছে মোহাম্মদপুর। যেখানে দিনদুপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে অহরহ। ঢাকা শহরে ছিনতাইকারীদের বিভিন্ন চক্র রয়েছে। যেমন মলম পার্টি। এরা যাত্রীদের টার্গেট করে, ছিনতাইয়ের শিকার ব্যক্তির চোখে মলম লাগিয়ে দেয়। ওই ব্যক্তি কিছুক্ষণ চোখে দেখে না। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা বাস, লঞ্চ ও ট্রেনে সক্রিয় থাকে। বর্তমানে হ্যান্ডশেক পার্টি ঢাকা শহর, সেইসঙ্গে অন্যান্য জনবহুল শহরে সর্বত্র দেখা যায়। তারা নির্দিষ্ট কিছু লোককে টার্গেট করে। পরে তাদের একা পেলে ছুরি বা পিস্তল দেখায়। অসহায় লোকটি প্রাণ বাঁচানোর জন্য সব দিয়ে দেয়।

ছিনতাইকারীরা বিভিন্ন কায়দায় ছিনতাই করে থাকে। যখন কেউ নির্জন রাস্তা দিয়ে একা একা রিকশায় যাচ্ছেন, তখন আরেকটি রিকশায় দুজন তরুণ অন্য রিকশাটির পাশে এসে একা যাত্রীর দুই পাশে দুই তরুণ দাঁড়িয়ে ওই যাত্রীকে নিচুগলায় বলে, ‘চিল্লাচিল্লি করবেন না, আমাদের সঙ্গে ছুরি, পিস্তল আছে। টাকা, মানিব্যাগ, মোবাইল যা আছে সব দিয়া দেন।’ যাত্রী প্রাণভয়ে বাধ্য হয়ে সব দিয়ে দেন। ছিনতাইকারীরা শুধু টাকা-মোবাইল-গহনা ছিনিয়ে নেয় না, বাধা দিতে গেলে প্রাণহানিও ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। ছিনতাইয়ের শিকার হন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

পুলিশের হিসাবেই রাজধানী ঢাকায় ছয় হাজারের বেশি ব্যক্তি ছিনতাই ও ডাকাতির মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৭ জন ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। পুলিশ সূত্র বলছে, ঢাকায় সাধারণত পথ আটকে অস্ত্রের মুখে টাকাপয়সা ও মূল্যবান মালপত্র নিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, এলাকাভিত্তিক ছিনতাই বেশি হয়। বাড্ডা, মিরপুর, শাহবাগ, মগবাজার, রমনা, মালিবাগ রেলগেট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকা, গুলিস্তান, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায়ও ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে।

রাজধানী শহরের ১৪ বছরের ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কিছু ঘটনায় বিচার হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। অধিকাংশ ছিনতাইকারী বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সালের পুলিশ সদর দপ্তরের এক পরিসংখ্যান থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, রাজধানীতে বেশিরভাগ ছিনতাকারীর বিচার হয়নি। এ ব্যাপারে বিশ্লেষকরা বলছেন, ছিনতাইয়ের ঘটনাকে ‘হারানোর ঘটনা’ উল্লেখ করে জিডিই এর অন্যতম কারণ। এতে অপরাধীদের খুব সামান্যই আইনি ব্যবস্থার মধ্যে আসে। অজ্ঞাত পরিচয় আসামি উল্লেখ করে মামলা করায় সাক্ষীও পাওয়া সম্ভব হয় না। এ ছাড়া প্রযুক্তির যোগ হওয়া সত্ত্বেও মামলার তদন্তে প্রযুক্তির ব্যবহারে ঘাটতি রয়েছে। এমন অবস্থা থেকে বের হতে ছিনতাইকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তের কথা বলছেন তারা। পাশাপাশি এ অপরাধের জন্য ‘ছিনতাই’ নামেই মামলা হওয়া উচিত।

কর্তৃপক্ষের নজরদারি জোরদার প্রয়োজন। এ অপরাধ দমন করা অসম্ভব কিছু নয়। পুলিশ কর্মকর্তাদের সক্রিয় হতে হবে। যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ছিনতাইকারীদের দ্রুত আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হতে হবে। ছিনতাই দমনে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টির পাশাপাশি জনসাধারণের সতর্ক হওয়ার বিকল্প নেই।

সাকিবুল হাছান,সমাজবিজ্ঞান বিভাগ ঢাকা কলেজ, ঢাকা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খাবার নিয়ে বিপাকে রণবীর কাপুর

প্রাথমিক শিক্ষকদের ৩ দিনের কর্মবিরতি শুরু

মারা গেলেন কিংবদন্তি জার্মান অভিনেতা

কনকনে শীতে কাঁপছে তেঁতুলিয়া

৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সিট প্ল্যান প্রকাশ

এ ছবিটিই বলে দেবে আপনার মানসিক চরিত্র

দুধ দিয়ে গোসল করে দাম্পত্যের ইতি টানলেন প্রবীর

দেশের বাজারে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

রাকুলের সতর্কবার্তা

বায়ুদূষণের শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত

১০

হেলে পড়া ভবন পরিদর্শন শেষে যা জানাল বিসিসি

১১

মধ্যরাতে পাকিস্তানের বোমা হামলায় ৯ আফগান শিশুসহ নিহত ১০

১২

যেসব দেশে থাকার জন্য টাকা পাওয়া যাবে

১৩

নিয়োগ দিচ্ছে আকিজ গ্রুপ

১৪

মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্য সহায়তায় নতুন কৌশলে যুক্তরাষ্ট্র

১৫

গায়েহলুদে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে বর-কনে

১৬

১৩ মাসে কোরআনের হাফেজ হলেন শিশু মাকসুদুর

১৭

বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরির সুযোগ, দ্রুত আবেদন করুন

১৮

আজ থেকে ঘরে বসেই মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ করবেন যেভাবে

১৯

‘পরিমার্জিত’ শান্তি পরিকল্পনায় একমত যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন 

২০
X