জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দুই শিক্ষকসহ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) শাখার তিন নেতার উপর হামলার প্রতিবাদে তিন দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংগঠনটি। আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভাস্কর্য চত্ত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ মিছিল শেষ হয়।
এসময় তারা ‘শিক্ষা সন্ত্রাস একসাথে চলে না’, ‘যে হাত ছাত্র মারে সে হাত ভেঙে দাও’, ‘যে হাত শিক্ষক মারে সেই হাত ভেঙে দাও, মবোক্রেসির রাজনীতি এই ক্যাম্পাসে চলবে না’ এসব স্লোগান দেন তারা।
তাদের তিন দফা দাবি হলো- ছাত্র এবং শিক্ষকদের উপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে এবং সরাসরি জড়িতদের বহিষ্কার করতে হবে ; ক্যাম্পাস নিরাপদ করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সেল গঠন করতে হবে ; ক্যাম্পাসে অছাত্র এবং বহিরাগতদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বন্ধ করতে হবে অছাত্রদের প্রবেশে সীমাবদ্ধতায় নিয়ে আসতে হবে ।
এসময় শাখা বাগছাস সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, আজকে যে দলটি এই ঘটনা ঘটিয়েছে এই ধরনের ঘটনা এটা তাদের প্রথম না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
বাগছাস কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক নুরনবী বলেন, জুলাই বিপ্লবের পরে আমরা এমন এক ক্যাম্পাসের আশা করেছিলাম যেখানে ছাত্রলীগের মত ছাত্র এবং শিক্ষকরা কোন ধরনের হামলার শিকার হবে না। আমরা একটা নিরাপদ ক্যাম্পাস আশা করেছিলাম। কিন্তু এখন আমরা দেখছি ছাত্রলীগের মত হীন কর্মকাণ্ড ছাত্রদলের মাঝে দেখতে পাচ্ছি। আজ মবের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে শিক্ষক এবং শিক্ষকদের উপর হামলা করা হয়।
শাখা বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম মারুফ বলেন, এই জেনারেশনের জন্য সবচেয়ে বড় অর্জন এই জুলাই অভ্যুথান। ছাত্ররা যে কারণে আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হলো, আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি জুলাই বিপ্লবের একবছরের মাঝে আমরা আবার ঐ বিষয় গুলো দেখতে পাচ্ছি। জোরজবরদস্তি এবং পেশিশক্তির রাজনীতি আমরা আবার দেখতে পাচ্ছি। আমরা বিগত সময় বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি দেখেছি আমরা তা আর দেখতে চাই না।
এর আগে, আজ বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ ভবনের নিচে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রফিক বিন সাদেক রেসাদের ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে মারধর শুরু করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টা ড. এ কে এম রিফাত হাসান এবং সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলাম রক্ষা করতে গেলে তাদেরকে গালিগালাজ ও হামলা করে ছাত্রদলের নেতকর্মীরা। একই সাথে শাখা বাগছাস সভাপতি, মুখ্য সংগঠক ও যুগ্ম-আহ্বায়ক যথাক্রমে মো. ফয়সাল মুরাদ, ফেরদৌস হাসান এবং ফারুককে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে তাদের উপরও হামলা ও মারধর শুরু করে তারা। বর্তমানে তারা ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মন্তব্য করুন