খালাফ আহমেদ আল-হাবতুর
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৭ এএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

চার বছর ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে বিশ্বকে

চার বছর ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে বিশ্বকে

অনিশ্চয়তার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে গোটা বিশ্ব। কারণ, ২০ জানুয়ারি আবারও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বাচনভঙ্গি আগেও উসকানিমূলক ছিল, এখনো আছে। কিন্তু তফাতটা এই জায়গায়, তার রাজনীতির কৌশল অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ থেকে সরে গিয়ে এখন সাম্রাজ্যবাদী রূপ ধারণ করেছে। সম্প্রতি তিনি কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করা, পানামা খাল পুনর্দখল করা, মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘আমেরিকান উপসাগর’ করা, এমনকি গ্রিনল্যান্ডের দখল নেওয়ার অভিলাষ ব্যক্ত করেছেন। তার এসব বক্তব্য পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে। জার্মানির নির্বাচনে ইলন মাস্কের সংশ্লিষ্টতা আর ব্রেক্সিট-পরবর্তী সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক জোরদার করার মতো ঘটনা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রাঙ্গণে বড় আকারের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। অন্তত ডোনাল্ড ট্রাম্পের বর্তমান আচরণ এরকম বড় কোনো পরিবর্তনেরই নির্দেশক। তা ইতিমধ্যে স্পষ্টও। জগৎব্যাপী সবার মনেই নতুন করে কিছু প্রশ্নের সঞ্চার হচ্ছে। বিশ্ব কি এক নতুন ঔপনিবেশিক যুগের সূচনা দেখতে চলেছে? নাকি আগেরবারের মতো আবারও ডোনাল্ড ট্রাম্প ফাঁকা বুলি আওড়াচ্ছেন?

ট্রাম্প অনেকবার দাবি করেছেন যে, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানতে পারেন। কিন্তু তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড এই দাবিকে সমর্থন করে না। তিনি নিজেকে শান্তির দূত মনে করলেও তার কথাবার্তা আর রাজনৈতিক কৌশল বারবার বৈশ্বিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে চলেছে। অন্যান্য দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করা তার পররাষ্ট্রনীতির অংশ বলে মনে হচ্ছে। শুধু প্রতিদ্বন্দ্বী রাষ্ট্রই নয়, আমেরিকার মিত্র দেশগুলোও এখন আমেরিকার ভবিষ্যৎ কর্মসূচির ব্যাপারে উদ্বিগ্ন। আগামী চার বছরে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে যে পরিবর্তন আসবে, তার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হলে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে গোটা বিশ্বকে।

কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়েছেন কানাডার জাতীয় পর্যায়ের নেতারা। শুধু তাই নয়, মিত্র দেশের এমন প্রস্তাবকে অপমানজনক বলে মত প্রকাশ করেছেন তারা। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এই প্রস্তাবকে জোরালো কণ্ঠে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং সবাইকে কানাডার সার্বভৌমত্বের ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন। একইভাবে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার প্রস্তাব লাতিন আমেরিকায় উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে এই জলপথ, যার নিয়ন্ত্রণ ১৯৯৯ সাল থেকে পানামার কাছে। আমেরিকা এই খালের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইলে তাকে আন্তর্জাতিক চুক্তি লঙ্ঘন করতে হবে। এই পরিবর্তন দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে বিঘ্নিত করবে।

অন্যদিকে, মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করার উদ্যোগ উত্তর আর দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক বন্ধনগুলোর প্রতি ট্রাম্পের অবজ্ঞাকে তুলে ধরে। মেক্সিকো সরকারের পাশাপাশি মধ্য আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশের শাসকগোষ্ঠীও এ ধরনের বক্তব্যকে তাদের জাতীয় পরিচয়ের প্রতি অবমাননা এবং আরও আক্রমণাত্মক নীতির সম্ভাব্য পূর্বাভাস হিসেবে দেখছে। পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের এমন বিবৃতি অন্যান্য দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। তাদের প্রশাসনও প্রস্তুত হচ্ছে বড় কোনো সম্ভাব্য পরিবর্তনের জন্য, যা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়, প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট হয়েও তিনি এই অভিলাষ ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের ভাষণগুলোয় তিনি বেশ জোর দিয়েই বলেছেন যে, গ্রিনল্যান্ডকে আমেরিকার অধীনে নেওয়া জাতীয় নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অধীন স্বায়ত্তশাসিত একটি অঞ্চল। ড্যানিশ সরকার ট্রাম্পের বক্তব্যকে অযৌক্তিক এবং অসংগত বলে মত প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তারা এই ভূখণ্ডের স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। ডেনমার্কের সরকারি কর্মচারীরা ট্রাম্পের প্রস্তাবকে গ্রিনল্যান্ডের পাশাপাশি ডেনমার্কের সার্বভৌমত্বের ওপর অযাচিত আক্রমণ বলে দাবি করেছেন। যদি গ্রিনল্যান্ডের শাসনভার আমেরিকার কাছে যায়, তবে উত্তর মেরু অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক কাঠামোতে আমূল পরিবর্তন দেখা দেবে। এই অঞ্চল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

আবার এই উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে, তাদের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতে পারে। মিত্র দেশগুলোকে প্ররোচিত করা এবং গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোকে অস্থিতিশীল করে দিলে, ট্রাম্পের নীতিগুলোই আমেরিকার কৌশলগত অংশীদারত্বকে দুর্বল করে দেবে। এমনটা ঘটলে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পেয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। ট্রাম্পের সরকার এরই মধ্যে তাদের পররাষ্ট্রনীতিকে রূপ দিতে শুরু করেছে। সবার মনে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, তাদের নিজের দেশের ওপর এই নীতিগুলো কী প্রভাব ফেলবে?

আরব অঞ্চলের জন্য ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন অনেক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই অঞ্চলের অনেক দেশেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যেখানে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্রের হাজারো সৈন্য। মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান প্রভাব বজায় রাখতে এই সামরিক অবস্থান সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে আমেরিকার এই সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হলে, আরব বিশ্ব আরও অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।

ট্রাম্পের অতীত মন্তব্যগুলো এই শঙ্কাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছে। তিনি একাধিকবার এই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, নিরাপত্তার বিনিময়ে তিনি আরব দেশগুলোর কাছ থেকে ‘চাঁদা’ আদায় করবেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকা বিনামূল্যে আর কাউকে নিরাপত্তা দেবে না, আরব বিশ্বের নেতাদের তাই নিরাপত্তার খরচ বহন করতে হবে। এই মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্রদেরও ভাবাতে শুরু করেছে। তারা ধারণা করছেন, আর্থিক সম্পর্ক শিগগির যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিতে পরিণত হবে।

এই পরিবর্তনের প্রভাব শুধু আরব অঞ্চলেই নয়, গোটা বিশ্বের ওপর পড়বে। কানাডা, ডেনমার্ক আর পানামা—সবই আমেরিকার বন্ধুরাষ্ট্র। কিন্তু তাদের সঙ্গে সম্পর্ক মন্দ হয়ে গেলে, আমেরিকার অন্যান্য পুরোনো বন্ধুও বিচলিত হয়ে যাবে। ট্রাম্পের নীতি আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্যান্য দেশকে বাধ্য হয়ে প্রতিক্রিয়াশীল নীতি কার্যকর করতে হবে। কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হলে তাদের অর্থনৈতিকভাবে জবাব দিতে হতে পারে। আর সেটাও যদি ব্যর্থ হয়, তবে আরও চরম কোনো পন্থা অবলম্বন করা আবশ্যক হয়ে পড়তে পারে।

ইউরোপের জন্য রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। ন্যাটোকে নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান এরই মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বিড়ম্বনায় ফেলে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে একটি ঐক্যবদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে তার অগ্রাহ্য করার প্রবণতার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তিগুলো সাহস জোগাতে সক্ষম হচ্ছে। ইউরোপের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা বর্তমানে অনেকাংশেই নাজুক। আমেরিকার নতুন নীতির কারণে তা অস্থিতিশীল হয়ে যেতে পারে।

বিশ্ব এখন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবমান। সবার মনে এখন একই প্রশ্ন—ডোনাল্ড ট্রাম্প যা পরিকল্পনা করছেন, তার ঠিক কতখানি বাস্তবে রূপ নেবে? তার কর্মকাণ্ড কি পৃথিবীকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেবে? আগেরবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকাকালে তিনি বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে সরে এসেছেন, শুল্ক আরোপের রাজনীতি চর্চা করেছেন এবং আমেরিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুনর্নির্ধারণ করেছেন। তবুও তার সবচেয়ে জোরালো হুমকিগুলো কিন্তু বাস্তবে রূপ নেয়নি।

তার পরও ইতিহাস যদি আমাদের কোনো শিক্ষা দিয়ে থাকে, তা হলো কোনো হুমকিকেই অবজ্ঞা না করা। অপ্রত্যাশিত আচরণই ট্রাম্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। বিশ্ববাসীকে সব সম্ভাবনার জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে, বিশেষত আরব অঞ্চলের মানুষকে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কী রকম হবে, সে বিষয়ে ভূমিকা রাখতে হলে তাদের আগে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে হবে। বর্তমানে ঐক্য, সহযোগিতা এবং সংহতির আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে।

আসন্ন চার বছর পৃথিবীর ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তা, জাতিগুলোর মধ্যে সহনশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নীতি—সবকিছুই পরীক্ষার সম্মুখীন হতে চলেছে। নিজ দেশের ভূখণ্ড, জনগণ এবং অর্থনীতিকে যে কোনো ধরনের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে নেতাদের। এ বিষয় নিশ্চিত যে, সময়টা উদাসীনতার নয়; বরং নিজ স্বার্থ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করার, সিদ্ধান্তমূলক এবং ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ গ্রহণ করার। কীভাবে আমাদের প্রজন্ম এই আসন্ন বাধা ও বিপত্তির মোকাবিলা করবে, তা নিয়েই আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের সার্থকতাকে বিচার করবে।

লেখক: সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। নিবন্ধটি আরব নিউজের মতামত বিভাগ থেকে অনুবাদ করেছেন অ্যালেক্স শেখ

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেমন থাকবে আজ ঢাকার আবহাওয়া

ইয়েমেনের তেলবন্দরে মার্কিন বিমান হামলায় নিহত ৩০

হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে সড়কে ঝরল ৪ প্রাণ

১8 এপ্রিল : আজকের নামাজের সময়সূচি

তালেবান আর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী নয়, রায় দিল রাশিয়া

টাইম ম্যাগাজিনে হিলারি ক্লিনটনের মুখবন্ধ / ড. ইউনূস বাংলাদেশকে নিপীড়নের ছায়া থেকে বের করে আনছেন

১৮ এপ্রিল : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকে ধরিয়ে দিল বিএনপি নেতাকর্মীরা

চবির অপহৃত ৫ শিক্ষার্থীর অবস্থান শনাক্ত

দুপুরের মধ্যে তিন বিভাগে তীব্র বজ্রপাতসহ ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস 

১০

আরও ৩২ মৃত্যু / প্রজন্মের সবচেয়ে বড় মানবিক ব্যর্থতার নাম গাজা

১১

আপত্তিকর ব্যানার নিয়ে উদ্বেগ-নিন্দা সিইউজের

১২

ডিএনসিসির গণশুনানিতে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের হট্টগোল, ধাক্কাধাক্কি

১৩

আমরা ফের রাস্তায় নামলে অনেক উপদেষ্টার দেশ ছাড়তে হবে : নুরুল হক নুর

১৪

দেড় যুগ পর দেশে ফিরলেন জিয়া পরিষদ নেতা জলিল খান

১৫

জুলাই রেভ্যুলুশনারি এলায়েন্সের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

১৬

কালবেলার নামে সালাউদ্দিন আহমেদকে নিয়ে ভুয়া কার্ড প্রচার

১৭

জহিরের শাস্তি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

১৮

টেস্ট ছাপিয়ে আলোচনায় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ

১৯

গাজাবাসীর সহায়তায় ১২ লাখ টাকা অনুদান দিলেন চসিক মেয়র

২০
X