কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৫ এএম
আপডেট : ০৪ মার্চ ২০২৫, ১১:৩৫ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সেই দিনটি

ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়

স্মরণ
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়

বাংলা চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেতা এবং বাংলা চলচ্চিত্রে একটি ইতিহাসের নাম ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আসল নাম সাম্যময় বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রে হাস্যকৌতুকের সংজ্ঞাটি বদলে দিয়েছিলেন। মানুষকে আনন্দ দেওয়ার যে উপাদান, যেন তা নিয়েই জন্মেছিলেন। তিনি শুধু কমেডিয়ান নন, একজন পূর্ণাঙ্গ অভিনেতা। বাংলা চলচ্চিত্রের এ মহান শিল্পীর জন্মদিন ২৬ আগস্ট। তিনি ১৯২০ সালের এই দিনে বাংলাদেশের বিক্রমপুর বর্তমানের মুন্সীগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রাথমিক স্কুলজীবন বিক্রমপুরে কাটলেও হাই স্কুল ও কলেজজীবন পুরোটাই কেটেছে ঢাকা শহরে। তিনি পড়েছেন পুরান ঢাকার জগন্নাথ কলেজে। তাই তার কথায় পুরান ঢাকার টান ছিল বরাবরই। টালিগঞ্জের অভিনেতাদের খাতায় নাম লেখানোর পর তিনি ‘ভানু’ নামে পরিচিতি পান। ১৯৪৭ সালে ‘জাগরণ’ সিনেমার মধ্য দিয়ে তার বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন শুরু হয়, সেইসঙ্গে নামও পাল্টে গিয়ে হয়ে যান ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। চিৎপুরের যাত্রার মঞ্চেও ছিল সমান আধিপত্য। শুধু অভিনয় নয়, সংলাপ লেখা এবং গানও গেয়েছেন অনেক। ভানুর কৌতুকের অডিও অতীতের মতো আজও রেকর্ডসংখ্যক বিক্রি হয়। ১৯৪১ সালে কলকাতায় চলে যান। সেখানে তিনি আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি নামে একটি সরকারি অফিসে যোগ দেন এবং বালীগঞ্জের অশ্বিনী দত্ত রোডে তার বোনের কাছে দুই বছর থাকার পর টালিগঞ্জের চারু অ্যাভিনিউয়ে বসবাস শুরু করেন। জাগরণের পর একই বছর ‘অভিযোগ’ নামে আরেকটি ছবি মুক্তি পায় তার। এরপর ধীরে ধীরে সিনেমার সংখ্যা বাড়তে থাকে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৪৯ সালে ‘মন্ত্রমুগ্ধ’, ১৯৫১ সালে ‘বরযাত্রী’ ও ১৯৫২ সালে ‘পাশের বাড়ি’। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। বলা যায় এ সিনেমার মাধ্যমেই ভানু দর্শকদের নিজের অভিনয়ের গুণে আকৃষ্ট করা শুরু করেন। এর পরের বছর মুক্তি পায় ‘ওরা থাকে ওধারে’। এরপর একে একে ‘ভানু পেল লটারি’, ‘যমালয়ে জীবন্ত মানুষ’, ‘পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট’, ‘৮০তে আসিও না’, ‘মিস প্রিয়ংবদা’, ‘ভানু গোয়েন্দা জহর অ্যাসিস্ট্যান্ট’ মুক্তি পেতে থাকে। ১৯৮৪ সালে ‘শোরগোল’ই তার সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা। অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় চরিত্রাভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই স্মৃতিচারণ করে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কখনো আফসোস করতে দেখিনি ভানুদাকে। অনেক ঝড় এসেছে জীবনে। তবে সমবেদনা চাননি। কারও কাছে হাতজোড় করে সাহায্য প্রার্থনা করেননি। লড়াকু মানুষ ছিলেন। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসলে নকল করা যায় না। তার থেকে উত্তাপ নেওয়া যায়।’ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবন, ব্যক্তিগত জীবন কিংবা শেষ জীবনের অনেক ঘটনার কথা এখনো রয়েছে অজানা। সেই অজানাকে জানানোর জন্যই ভানুর ভক্তদের সামনে ‘ভানু সমগ্র’ নামে বই প্রকাশ করা হয়েছে কলকাতায়। ১৯৮৩ সালের ৪ মার্চ মারা যান বাঙালির প্রিয় এই অভিনেতা। আজীবন যিনি বাঙালিকে হাসিয়েছেন, সেই তিনিই নিজের শেষযাত্রায় সবাইকে কাঁদিয়ে চিরবিদায় নেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

দুই শিক্ষার্থীসহ ৪ প্রাণ কাড়া দুই যানে ছিল না ফিটনেস

১৪ আগস্ট : টিভিতে আজকের খেলা

১৪ আগস্ট : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৃহস্পতিবার রাজধানীর যেসব মার্কেট বন্ধ

ক্ষমতায় থাকাকালীন আ.লীগ দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে বানিয়েছিল : নীরব

রংপুরে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারগুলোর পাশে ইসকন

স্বপ্ন পূরণের পথে দাবাড়ু মুনতাহা, পাশে দাঁড়ালেন আমিনুল হক

কেশবপুরে বিএনপির উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান

১০

নাটকীয় কামব্যাকের পর টাইব্রেকারে পিএসজির সুপার কাপ জয়

১১

জন্মাষ্টমী : সাংবাদিকদের সাথে পূজা পরিষদের মতবিনিময় বৃহস্পতিবার

১২

রাহুল গান্ধীকে হত্যার হুমকি

১৩

সাদা পাথর উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু

১৪

বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে উয়েফা সুপার কাপে

১৫

স্বর্ণ পাচারে জড়িত সেই কেবিন ক্রু রুদাবা সাসপেন্ড

১৬

ইতালি উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকা ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু

১৭

অফিসে হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে কী করবেন 

১৮

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালককে গুলির পর কুপিয়ে হত্যা

১৯

হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য ধ্বংস 

২০
X