শুক্রবার, ২২ আগস্ট ২০২৫, ৭ ভাদ্র ১৪৩২
জাকির হোসেন
প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০২:৪১ এএম
আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:০৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ভাষার জন্য আসামে প্রাণ দিয়েছেন যারা

ভাষার জন্য আসামে প্রাণ দিয়েছেন যারা

বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন আব্দুস সালাম, আবুল বরকত, আব্দুল জব্বার, রফিকউদ্দিন আহমেদ, শফিউর রহমান, অহিউল্লাহসহ অনেকে। প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বিশ্বব্যাপী তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। কিন্তু আসামে বাংলা ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারীরা আমাদের অনেকেরই স্মৃতির দেয়াল থেকে হারিয়ে গেছেন। ১৯৬১ সালে ভারতের আসাম প্রাদেশিক সরকার বরাক উপত্যকার (বরাক ভ্যালি) কাছাড় জেলার বাঙালি অধ্যুষিত শিলচর, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দির বাংলা ভাষাভাষীদের প্রাণের ভাষা বাংলাকে বাদ দিয়ে শুধু অহমিয়া ভাষাকে রাজ্যের একমাত্র সরকারি ভাষা ঘোষণা করে। এই ঘোষণার প্রতিবাদে বাঙালিরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং পরে তা আন্দোলনে রূপ নেয়। শিলচর, করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দিসহ বরাক উপত্যকার একাধিক এলাকায় এই দাবিতে একের পর এক আন্দোলন সংঘটিত হতে শুরু করে। সেই আন্দোলনের ঢেউকে প্রতিহত করতে পাল্টা চাপ দিতে শুরু করে তৎকালীন রাজ্য সরকার। ১৯৬১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শিলচরে গঠিত হয় ‘কাছাড় গণসংগ্রাম পরিষদ’। নীলকান্ত দাস, রথীন্দ্রনাথ সেন, বিভূতিভূষণ চৌধুরীর নেতৃত্বে শিলচর, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জে শুরু হয় বাংলা ভাষার সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে গণআন্দোলন। ওই বছরের ১৪ এপ্রিল পালিত হয় ‘সঙ্কল্প দিবস’। ২৪ এপ্রিল থেকে এই দাবিতে বরাক উপত্যকার সর্বত্র শুরু হয় ১৫ দিনব্যাপী পদযাত্রা। এই আন্দোলনের অন্যতম নেতা রথীন্দ্রনাথ সেন ঘোষণা করেন, ১৮ মের মধ্যে বাংলাকে আসামের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া না হলে ১৯ মে বরাক উপত্যকায় সর্বাত্মক হরতাল পালন করা হবে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের হুমকি, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ কিছুতেই কাজ হয়নি। ১৮ মে পর্যন্ত বাংলাকে আসামের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি না দেওয়ায় ১৯ মে সকাল থেকে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী হরতাল শুরু হয়। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভের আগুন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি পুলিশের নাগালের বাইরে চলে গেলে প্রথমে লাঠিচার্জ করে আধাসামরিক বাহিনী। তারপর শুরু হয় গুলি। মুহূর্তেই লুটিয়ে পড়েন ১৫ বিক্ষোভকারী। ঘটনাস্থলেই মারা যান ৯ জন। পরদিন আরও দুজন মারা যান হাসপাতালে। সেই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন তারা হলেন কমলা ভট্টাচার্য, শচীন্দ্র পাল, বীরেন্দ্র সূত্রধর, কানাইলাল নিয়োগী, চণ্ডীচরণ সূত্রধর, সত্যেন্দ্র দেব, হীতেশ বিশ্বাস, কুমুদরঞ্জন দাস, তারিণী দেবনাথ, সুনীল সরকার ও সুকোমল পুরকায়স্থ। তাদের সেই আন্দোলন ও আত্মত্যাগ বিফলে যায়নি। পরবর্তী সময়ে বাংলাকে আসামের সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ভাষাশহীদদের স্মরণে আসামে এখনও ১৯ মে ভাষা দিবস পালিত হয়।

লেখক: সহকারী সম্পাদক, দৈনিক কালবেলা

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তারেক রহমান শিগগিরই দেশে ফিরবেন, নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীও হবেন : এ্যানি

দলবদলের বাজারে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর রেকর্ড ভাঙা খরচ

ধর্মগড় সীমান্তে বিজিবির হাতে আটক চার বাংলাদেশি

হাসিনাকে ফেরত পাঠানো নিয়ে মোদিকে ওয়েইসির প্রশ্ন

জাকসুতে প্যানেল দ্বন্দ্ব, পদত্যাগ করে বাগছাস নেতার মিষ্টি বিতরণ

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আন্তর্জাতিক মানের করতে চাই : বেবিচক চেয়ারম্যান

‘আ. লীগ বিদ্যুৎ খাতে চুরির লাইসেন্স দিয়েছিল’

আ.লীগ নেত্রী রুনু গ্রেপ্তার

ইসির ইউটিউব চ্যানেল চালু, মিলবে যেসব তথ্য

শিশু ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ, গ্রেপ্তারের দাবি শিক্ষার্থী

১০

চার বিভাগে ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি, পাহাড়ধসের আশঙ্কা

১১

ভোলায় পাঁচ দিন ২০ নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি চরমে

১২

থানা ব্যারাকে নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণ, তিনজন ক্লোজড

১৩

পিআর পদ্ধতিতে সব ভোটারের মূল্যায়ন হয় : চরমোনাই পীর

১৪

তিস্তায় কার্টুন বক্সে ভাসছিল নবজাতকের মরদেহ

১৫

দেশের উন্নয়নে মেধাবী শিক্ষার্থীদের এগিয়ে আসতে হবে : চসিক মেয়র

১৬

কৃষক দল সম্পাদক বাবুলের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল

১৭

চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের সতর্কবার্তা / ‘সাংবাদিকরা চুপ থাকলে সমাজ অন্ধকারে ডুবে যাবে’

১৮

যেসব অনিয়মে বাতিল হবে এজেন্সির নিবন্ধন

১৯

অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে সিলেট জেলা পুলিশ অঙ্গীকারবদ্ধ : পুলিশ সুপার

২০
X