ক্রিকেটারদের নামেও খাবারের মেন্যু হতে পারে—এভাবে কি কখনো কেউ চিন্তা করেছিল আগে! খুঁজে ঠিক সেভাবে পাওয়া যায়নি। যতটা না পাওয়া গেল কলম্বোর ফ্লাওয়ার রোডে মিউজিয়ামের মতো সাজানো ‘ক্রিকেট ক্লাব ক্যাফে’তে। খাবারের মেন্যুতে সেখানে ক্রিকেটারদের নামের চেয়ে বড় ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্মারক, যেখানে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান থেকে শুরু করে বিশ্বক্রিকেটের অনেক কিংবদন্তির দেখা মিলবে। তবে আপনি যদি বাংলাদেশি হয়ে থাকেন, তাহলে আকরাম খান কিংবা সাকিব আল হাসানদের নাম না দেখে হতাশও হতে পারেন। আবার আপনার এ হতাশা দূর করে দেবে ভেতরে উড়তে থাকা লাল-সবুজের পতাকা কিংবা কলম্বো থেকে ঢাকা স্টেডিয়ামের দূরত্বের ম্যাপটা।
প্রথমবার ঘুরতে গিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে কলম্বো শহরের বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ক্রিকেট ক্লাব ক্যাফেটি। এরপর থেকে বিভিন্ন দেশ ঘুরে কিংবদন্তিদের স্মারকগুলো সংগ্রহের কাজটা শুরু হয় তাদের। নামে ক্যাফে হলেও ভেতরে প্রবেশের পর যে কারও মনে হবে, এটা কোনো ‘ক্রিকেট মিউজিয়াম’। অন্তত টেস্ট ক্রিকেটের এত এত অবিস্মরণীয় স্মারক হয়তো আর কোথাও এভাবে একত্রে সংরক্ষিত নেই। মনে হতে পারে, বিশ্বক্রিকেটকে মিলিয়ে তোলার কোনো একটি ঘর কলম্বো শহরের বুকে। তবে বিষয়টি সেরকম কিছুই নয়; নিখাদ ক্রিকেট-প্রেম থেকেই এমন ক্যাফে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জেমস ও গাব্রিয়েল নামে দুজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। মেলবোর্ন শহরে জন্ম হলেও কলম্বোতেই এমন কিছু তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তারা। দ্বিতল বিশিষ্ট ক্যাফেজুড়ে স্যার ডন ব্যাডম্যান থেকে শুরু করে শেন ওয়ার্নের নানা ক্রিকেট স্মারক সেখানে সংরক্ষিত আছে। বিভিন্ন সিরিজে তাদের বিশ্বরেকর্ড গড়ার বল, ব্যাট, কিংবা জার্সি, সোয়েটার—কতকিছুর দেখা মিলবে এক ক্যাফেতেই।
শুধু তাই করে থেমে থাকেননি প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা। শুরুতে যেটা বলেছিলাম। কোনো ক্যাফের খাবারের মেন্যু যে ক্রিকেটারদের নামে হতে পারে, সেটারই দেখা মিলল ক্রিকেট ক্লাব ক্যাফেতে। বিশাল খাবারের তালিকার শুরুর দিকে আছে শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের স্মরণে ‘মুরালি মুল্লিগাতাওনে’, পাকিস্তান কিংবদন্তি ইমরান খানের নামে ‘ইমরানস পাকিস্তানি পাম্পকিন’ আর গ্রেগ চ্যাপেলের নামে, ‘চ্যাপেলস সেজার’। শুধু তাই নয়, আছে ভারতীয় কিংবদন্তি ব্যাটার সুনীল গাভাস্কারের নামে ‘গাভাস্কার্স গ্রেক’, আছে অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি অ্যালান বর্ডারের নামে ‘বর্ডার বার্গার’। বিশ্বক্রিকেটে রাজত্ব করা বা টেস্ট ক্রিকেটের রাজাদের এমন অনেক কিছুর দেখা মিলে যাবে এক ক্যাফেতেই। সেখানে খাবারের চেয়ে মানুষ বেশি উপভোগ করেন ক্রিকেটীয় সংগ্রহশালাকে।
মন্তব্য করুন